কর ফাঁকি : রবির সব ব্যাংক হিসাব জব্দ

কর ফাঁকির অভিযোগে মোবাইল ফোন অপারেটর রবির সব ব্যাংক হিসাব তিন দিনের জন্য জব্দ (ফ্রিজ) রাখতে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এনবিআরের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ) থেকে সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীকে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে এলটিইউ-এর কর কমিশনার মতিউর রহমান বলেন, ‘প্রায় ১৯ কোটি টাকা ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটর রবির বিরুদ্ধে।’ তিনি বলেন, ‘অন্য অপারেটররা নির্ধারিত সময়ে ভ্যাট দিলেও রবি দেয়নি। এ কারণে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তাদের সব ব্যাংক হিসাব তিন দিনের জন্য ফ্রিজ রাখতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’

এনবিআরের চিঠিতে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির সর্বশেষ আর্থিক বিবরণী ও সিম বিক্রির কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, রবি অপরিশোধিত সম্পূরক শুল্ক, স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ওপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত ভ্যাট, কম প্রদর্শিত সিমের ওপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত সম্পূরক শুল্ক ও ভ্যাট এবং বিটিসিএলকে প্রদত্ত সেবার ওপর প্রযোজ্য অপরিশোধিত ভ্যাট বাবদ মোট ১৮ কোটি ৭২ লাখ ৮৮ হাজার ৩২ টাকা নির্ধারিত সময়ে সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে কর ফাঁকি দিয়েছে। ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাবদ ওই অর্থ ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে ভ্যাট আইনের আওতায় রবির ব্যাংক হিসাব আগামী তিন কার্যদিবস জব্দ রাখতে ব্যাংকগুলোকে অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে। এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রায় ৯২৫ কোটি টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে রবিকে চিঠি পাঠিয়েছিল এনবিআর।

জানতে চাইলে রবির ভাইস প্রেসিডেন্ট (কমিউনিকেশনস অ্যান্ড করপোরেট রেসপন্সিবিলিটি) ইকরাম কবীর বলেন, ‘‘এটি কর ফাঁকি নয়। এনবিআরের সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিনের চলমান dispute। চিঠিতে উল্লিখিত ‘মূল্য সংযোজন কর আইনের ধারা ২৬-খ-এর উপধারা ৫’-এ বলা হয়েছে, ‘এই ধারার বিধান কার্যকর করার ক্ষেত্রে করদাতার অনুকূলে শুনানির সুযোগদান সংক্রান্ত আইনের অন্যান্য বিধান অনুসরণ করতে হবে।’ অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা হলো, আমরা এ ক্ষেত্রে কোনও শুনানির সুযোগ পাইনি। লক্ষণীয়, এই চিঠিতে এমন কিছু বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে, যা আদালতে বিচারাধীন।’’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে দুই অপারেটর রবি ও এয়ারটেল একীভূত হওয়ার পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন সেবাদাতা কোম্পানিতে পরিণত হয় রবি আজিয়াটা লিমিটেড।