কাটা পড়ছে যশোর রোডের সেই গাছগুলোর শেকড়
শতবর্ষী গাছ রেখে যশোর-বেনাপোল সড়ক নির্মাণ হলেও কাটা পড়ছে গাছের শেকড়। এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে গাছ রক্ষার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা। অন্যদিকে শেকড় কাটা দুর্বল গাছ উপড়ে পড়ে জানমালের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন সড়কের পাশের বাসিন্দা ও সড়ক ব্যবহারকারীরা। তবে সড়ক বিভাগের দাবি, সড়কের স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করতে হলে শেকড় রেখে কাজ করা সম্ভব নয়।
কিলোমিটারের পর কিলোমিটার শতবর্ষী বৃক্ষশোভিত ঐতিহাসিক রোডটি বেনাপোল স্থলবন্দরকে যশোরের সাথে সংযুক্ত করেছে ।
২০১৭ সালে মহাসড়কের উন্নয়নে শতবর্ষী গাছগুলো কাটার সিদ্ধান্ত নেয়া হলে সোচ্চার হন পরিবেশবাদীরা। গাছ রক্ষায় শুরু করেন আন্দোলন। শেষ পর্যন্ত কালের সাক্ষী এই গাছগুলো রেখেই যশোর- বেনাপোল মহাসড়ক পুনঃনির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে কাজ শুরু হয়। কিন্তু স্কেভেটর দিয়ে প্রায় ৪ ফুট গর্ত খুঁড়ে সড়ক নির্মাণ করায় সড়কের পাশে থাকা অধিকাংশ গাছেরই শেকড় কাটা পড়ছে।
ইতোমধ্যে ৫০ শতাংশ খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর এ ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে গাছ রক্ষার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবেশবাদীরা।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, অত্যাধুনিক মেশিন ব্যবহার করে গাছের শিকড়গুলো কেটে ফেলছে। ফলে গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে।
এদিকে শেকড় কাটায় দুর্বল হয়ে বেশ কয়েক স্থানে উপড়ে পড়েছে গাছ। আরো গাছ উপড়ে পড়তে পারে এবং তাতে জানমালের ক্ষতির আশংকায় আতঙ্কিত সড়কের পাশের বাসিন্দা ও সড়ক ব্যবহারকারীরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, খনন করার সময় শিকড়গুরো কেটে নেয়। ফলে গাছগুলো এখন ঝুঁকিপূর্ণ। তাই তারা আতঙ্কে থাকে কখন গাছগুলো পড়ে যায়।
সড়ক ব্যবহারকারী গাড়ি চালক ও ব্যবসায়ী নেতারা জানান ইতিমধ্যে তিনটি গাছ পড়েছে। সামনে বর্ষার সময় অন্তত ৫০টি গাছ পড়ে যাবে। এতে ভারতের সাথে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।
পরিবেশবাদীদের অভিযোগ অস্বীকার করে সড়ক বিভাগ বলছে, গাছের শেকড় কাটায় ঝুঁকি বাড়লেও সড়কের স্থায়ীত্ব নিশ্চিত করতে এর বিকল্প নাই।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং এর কাজের স্বার্থে আমি ওখানে শিকড় রেখে কাজ করছে আমার সড়ক অপরিকল্পিত হবে। এবং সড়কের স্থানীয়ত্ব নষ্ট হবে। সুতারাং যে অর্থ ব্যয় করা হচ্ছে তা আর্থিক ক্ষতি হবে এবং সরকারের বদনাম হবে।’
২০১৭ সালে যশোর রোডের দু’পাশের ৬২০টি শতবর্ষীসহ ২ হাজার ৩১২টি রেইন্ট্রি গাছ কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বর্তমানে গাছ রেখেই এডিবি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় ৩ ২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৮ কিলোমিটার এ সড়কটির পুনঃনির্মাণের কাজ চলেছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন