কানাডায় মন্ত্রীর পদত্যাগ, কোণঠাসা প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো
দুর্নীতির তদন্তে কানাডার সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগে পদত্যাগ করেছেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী জেন ফিলপট। পদত্যাগ করার আগে তিনি বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান নেওয়ার ক্ষেত্রে আমি আস্থা হারিয়ে ফেলেছি।’
এক বিবৃতিতে ট্রেজারি বোর্ডের প্রধান জেন ফিলপট বলেন, ‘আমাকে আমার মূল্যবোধ, নৈতিক দায়িত্ব, সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলতে হবে।’
‘এসএনসি-লাভালিন ইস্যুতে ফৌজদারি মামলায় হস্তক্ষেপ করার জন্য রাজনীতিবিদ ও কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেলকে চাপ দেওয়া হয়’—এমন তথ্য-প্রমাণ সঙ্গে নিয়ে গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভায় পদত্যাগপত্র জমা দেন ফিলপট। পরে এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তাঁর পক্ষে মন্ত্রিসভায় কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
জেন ফিলপট আরো বলেন, ‘আইনের শাসনের ক্ষেত্রে কোনো মামলায় অ্যাটর্নি জেনারেলকে রাজনৈতিকভাবে হস্তক্ষেপ করার জন্য চাপ দেওয়া কোনোমতেই উচিত নয়। দুঃখজনক এই যে, সরকার কীভাবে এই বিষয়টিকে নিচ্ছে এবং কীভাবে এর মোকাবিলা করছে, এ ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছি।’
এদিকে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো মন্ত্রীর পদত্যাগের বিষয়ে মর্মাহত হয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘ফিলপটের পদত্যাগ করার ব্যাপারটি আমি বুঝতে পেরেছি।’
পরে মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে ট্রুডো বলেন, ‘এতদিন ধরে কানাডার মানুষের জন্য কাজ করায় ফিলপটকে ধন্যবাদ জানাই।’
এদিকে গত সপ্তাহে বিরোধীদল কনজারভেটিভ লিবারেল ট্রুডোকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানায়।
কানাডার মন্ট্রিলভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান এসএনসি-লাভালিন ইস্যুতে ফৌজদারি বিচার চলছে কানাডায়। ওই বিচারে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার পর আগামী অক্টোবরে অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ নির্বাচনে ট্রুডোর জনপ্রিয়তা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে বলে বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে।
পরে টরন্টোতে একটি সমাবেশে ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক কেলেঙ্কারির বিষয়ে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ব্যাপারটি অনেক গুরুত্বসহকারে নেওয়া উচিত এবং আমি নিজের ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চিত।’
কানাডার মন্ট্রিলভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান হলো এসএনসি-লাভালিন। বিভিন্ন দেশে নির্মাণকাজে অংশ নিয়ে থাকে প্রতিষ্ঠানটি। লিবিয়ায় ক্ষমতায় থাকা মুয়াম্মার গাদ্দাফির আমলে লিবিয়ার কাছ থেকে সরকারি কাজের চুক্তি নেওয়ার জন্য ঘুষ দেওয়া হয়েছিল প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। আর এই বিষয়টি নিয়েই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বিষয়টি আদালতে উঠে আসে। আর এ বিচারটিতে সরকার হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর বিরুদ্ধে। খবর বিবিসির।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন