কিশোরগঞ্জে ফুটপাতে নির্মান সামগ্রী দুর্ভোগে শহরবাসী

কিশোরগঞ্জ জেলা শহরে অধিকাংশ সড়ক ও ফুটপাত নির্মাণসামগ্রীর দখলে চলে গেছে। সড়কের ওপর রাখা হয়েছে ইট, খোয়া, পাথর, বালু ও রড।

এতে শহরজুড়ে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে শহরবাসীকে। নির্মাণসামগ্রী সড়কে ফেলে রাখার দৌরাত্ম্য দীর্ঘদিন ধরে চলছে এ শহরে। ফলে প্রতিদিনই সাধারণ মানুষকে স্বাভাবিক চলাফেরা করতে গিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে বৃদ্ধ এবং শিশুরা একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হতে চান না। এ সমস্যা নিয়ে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় ও জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির একাধিক সভায় আলোচনা করা হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে সমস্যার সমাধান করা হবে। কিন্তু উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অভিযান পরিচালনা না হওয়ায় অবস্থা দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

পৌর এলাকার ব্যাংকার দেবরাজ রায়, ব্যবসায়ী ফখরুল ইসলামসহ অন্তত ১০ জনের সঙ্গে কথা বললে তারা অভিযোগ করেন, নির্মাণসামগ্রীর কারণে হাঁটাচলায় ভোগান্তির পাশাপাশি প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে উদাসীন, তারা দেখেও না দেখার ভান করে চলে যান। বিশেষ করে এলাকার নির্বাচিত কাউন্সিলররা নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। অনেক বাড়ির মালিক, ব্যবসায়ী ফুটপাত ছাড়িয়ে রাস্তার ওপরও ইট-বালু স্তূপ করে রেখেছেন। এতে রাস্তা মালামালে সয়লাব হয়ে গেছে।

কাউন্সিলর আবদুল গনি জানান, ‘নির্মাণসামগ্রী সরানোর জন্য বলা হয়। ছোট শহর, সবাই চেনাজানা তাই সবসময় কঠোর হতে পারি না।’

শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সরেজমিন দেখা গেছে, খড়মপট্টি, নীলগঞ্জ সড়ক, হারুয়া, বত্রিশ, গাইটাল, তারাপাশা ইত্যাদি এলাকার সড়কগুলো দুই দিকেই নির্মাণসামগ্রীতে ঠাসা। এ ছাড়া শহরের চরশোলাকিয়া, নতুন পল্লী, মেথরপট্টি, রাকুয়াইল, পুরাতন কোর্ট রোডসহ ৩০টি মহল্লার ফুটপাতের ওপর ও সড়কের কিছু অংশজুড়ে রাখা আছে নির্মাণসামগ্রী। কোনো কোনো স্থানে রাস্তার মাঝ পর্যন্ত পাথর রাখা। রাস্তার মাঝে ভ্যান ও ঠেলাগাড়িতে ইট-বালু তোলা হচ্ছে। কোনো কোনো মহল্লায় রাস্তার মধ্যে ট্রাক্টর থামিয়েও বালু নামানো হচ্ছে।

পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, ‘আমার বাসার সামনে প্রায় দিনই মালামাল ফেলে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি করা হয়। এটা আর মেনে নেওয়া যায় না। একটি নীতিমালা তৈরি করে প্রশাসন ও জেলা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে সমস্যার সমাধান করা হবে ‘ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ সমস্যাটি বারবার উত্থাপিত হয়েছে।’ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের দিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।