কিশোরগঞ্জে ৫ আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার

কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজল, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক এনায়েত করিম অমি এবং ধর্মবিষয়ক সম্পাদক এ কে এম শামসুল ইসলাম খানসহ পাঁচজন আওয়ামী লীগ নেতাকে হত্যা ও নাশকতার বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব ও পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার ও বুধবার জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গ্রেপ্তারের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। তাতে জানানো হয়, গতকাল রাতে জেলা শহরের খড়মপট্টি এলাকা থেকে এম এ আফজলকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ সকালে এনায়েত করিম অমি ও এ কে এম শামসুল ইসলাম খানকে নগুয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানায়, গত ৪ আগস্ট জেলা শহরের খড়মপট্টি এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজলসহ (৭৫) অন্য আসামিরা পেট্রলবোমা, ককটেল, পাইপগান, পিস্তল ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র–জনতার মিছিলের ওপর হামলা করে। ওই সময় বাদী মো. মতিউর রহমান জীবন রক্ষার্থে দৌড়ে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটুর বাড়ির গেট খোলা পেয়ে ভেতরে আশ্রয় নেন।

এ সময় আসামিরা তাঁকে ধাওয়া করে পেট্রল দিয়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। বাদীসহ উপস্থিত মানুষ সেখানে আগুনের ভয়াবহতা দেখে পালিয়ে যান। এই ঘটনায় বাড়িতে থাকা জুলফিকার হোসাইন (৩৮) ও অঞ্জনা (২৮) নামের দুজন আগুনে পুড়ে মারা যান। এই ঘটনায় মো. মতিউর রহমান বাদী হয়ে গত ৩০ আগস্ট কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব আরও জানায়, গত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েত করিম অমি ও এ কে এম শামসুল ইসলাম খানসহ বিভিন্ন আসামি দা, রামদা, কিরিচ, বল্লম, লোহার রড, হকিস্টিক, পেট্রলবোমা, ককটেলসহ ছাত্র-জনতার মিছিলের ওপর হামলা করেন। এই ঘটনায় ৭ সেপ্টেম্বর মো. সাজ্জাদ হোসেন বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব-১৪ সিপিসি-২ কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মো. আশরাফুল কবির বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও অনুসন্ধানে আসামি এম এ আফজল, এনায়েত করিম অমি ও এ কে এম শামসুল ইসলাম খান ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

অন্যদিকে তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক মোতাহার ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন লাকীকে গ্রেপ্তার করে তাড়াইল থানা-পুলিশ। আজ ভোরে তাড়াইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজিজুল হক মোতাহারকে উপজেলা ধলা ইউনিয়নের কলমা গ্রাম থেকে ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াসউদ্দিন লাকিকে তাড়াইল-সাচাইল ইউনিয়নের কালনা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তাড়াইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. সোহেল মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ৪ আগস্ট আজিজুল হক মোতাহার ও গিয়াসউদ্দিন লাকিসহ বিভিন্ন আসামি দা, রামদা, কিরিচ, বল্লম, লোহার রড, হকিস্টিক, পেট্রলবোমা, ককটেল, পাইপগান, পিস্তলসহ ছাত্র-জনতার মিছিলের ওপর হামলা করলে মো. সুজন মিয়া নামের একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। এই ঘটনায় ৯ সেপ্টেম্বর মো. সুজন মিয়া বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। আসামিদের কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, আজ দুপুরে আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে আদালত তাঁদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।