কুমিল্লায় প্রথমবার সূর্যমুখী ফুলের বাণিজ্যিক চাষ
কুমিল্লায় চলতি মৌসুমে এই প্রথমবার বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। জেলার তিতাস উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নের মাছিমপুর গ্রামের কৃষক ওয়ালিদ সরকার প্রায় ৭৭ শতাংশ জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন। মূলত ছেলের আগ্রহের কারণেই প্রথমবারের মতো তিনি সূর্যমূখী চাষ করছেন। সূর্যমুখী চাষে নতুন হলেও মাঠজুড়ে বাম্পার ফলন হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মাঠজুড়ে মাথা নুুয়ে হাসছে অসংখ্য সূর্যমুখী। এসব ফুল থেকে মধু আহরণে ব্যস্ত সময় পার করছে মৌমাছিরা। এক ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে উড়ে যাচ্ছে আরেকটিতে।
কৃষক ওয়ালিদ সরকার বলেন, ‘আমার বড় পোলায় এবার কৃষি ডিপ্লোমা করছে। এল্লাইগা কৃষি ভালো বোঝে। আমডার এলাকায় সূর্যমুখী আগে কেউ লাগাইছে না। তাই সূর্যমুখী কেমনে লাগাইতে হয় হেইডা জানতাম না। পোলার ইচ্ছায় তবুও লাগাইছি। ‘পরথম ডরাইছি। যদি মাইর খাই। এহন ভালো ফলন হইছে। মনে সাহস পাইছি। আইয়ে বছর আবারও সূর্যমুখী লাগামু।’
তিনি আরও জানান, সূর্যমুখী চাষে সবমিলিয়ে খরচ হয়েছে ২১ হাজার টাকা। সবকিছু ঠিক থাকলে সূর্যমুখীর তেল বিক্রি করে দেড় লক্ষ টাকা লাভ হবে।
এদিকে, প্রতিদিনই বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর মানুষ সূর্যমূখী ফুল দেখতে আসছে। এ নিয়ে ওযালিদ সরকার বলেন, ‘পরথম বার সূর্যমুখী লাগাইছি। ফুল আওনের পরে সকাল-বিহাল মানুষ দেখতে আইয়ে। ফুল দেহে। ছবি তোলে।
রবিবার বিকেলে মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জর এলাকার জামিল হোসাইন বন্ধুদের নিয়ে সূর্যমুখী বাগান দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, খালাতো ভাইয়ের মাধ্যমে সূর্যমুখীর বাগানের কথা শুনে দেখতে এসেছি। আমরা ছাড়াও আরও প্রচুর মানুষ এসেছে। প্রথমবার সূর্যমুখীর বাগান দেখেছি, অনেক ভালো লাগছে।’
কৃষক ওয়ালিদ সরকারের ছেলে ওমর ফারুক টুটুল জানান, বিভিন্ন সভা-সেমিনারে গিয়ে জেনেছেন বাংলাদেশের আবহাওয়া সূর্যমুখী চাষের জন্য বেশ উপযুক্ত। ৯০ দিনেই ফসল ঘরে তোলা যায়। আর স্থানীয়ভাবে সূর্যমুখীর তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই বাবাকে সূর্যমুখী চাষ করতে বলেন। কিন্তু, বাবা প্রথমে রাজি হননি। পরে আমার পীড়াপীড়িতে গত ডিসেম্বরে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেন। ইনশাল্লাহ, সূর্যমুখীর বাম্পার ফলন হয়েছে। আমরা আশা করছি, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে ফসল ঘরে তুলতে পারবো।
কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ভারপ্রাপ্ত) উপপরিচালক শহিদুল হক বলেন, ‘প্রথমবারের মতো কুমিল্লা জেলায় ১২৪ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করা হয়েছে। আগামী বছর থেকে কুমিল্লায় সূর্যমুখী ফুলের চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে। সেই লক্ষ্যে কৃষকদেরকে সূর্যমুখী চাষাবাদে সবধরণের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।’
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন