কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে শেষ সময়ে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের
কুরবানি ঈদকে সামনে রেখে শেষ সময়ে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের। টুং টাং শব্দে মুখরিত হয় ওঠেছে কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর কামারপাড়া। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কুরবানির ঈদ এলে তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুন। কুরবানির পশু জবাইয়ের সরঞ্জাম তৈরিতে শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন কামাররা।
বৃহস্পতিবার সকালে ভূরুঙ্গামারী বাজারের বিভিন্ন কামারের দোকান ঘুরে দেখা যায়, তপ্ত লোহা গলিয়ে চলছে দা, বটি, ছুরি ও চাকু তৈরির কাজ। কেউ ভারী হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছেন আগুনরাঙ্গা লোহা। কেউ পোড়া দা ও ছুরিতে দিচ্ছেন শান। কেউবা হাঁপর টেনে বাতাস দিচ্ছেন। দম ফেলারও সময় নেই তাদের। ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে বলে জানান কামাররা। দা, ছুরি, চাকু ও বটির বেচাকেনা বেড়েছে। কারিগররা জানান, এবছর প্রতি পিছ চাকু ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৫০০ টাকা, ৬০০ থেকে ১০০০ টাকায় চাপাতি, জবাই ছুরি ৮০০-১২০০ টাকা বিক্রি করছেন। এছাড়াও পুরনোসব যন্ত্রপাতি শান দিতে গুনতে হচ্ছে ৮০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত।
ভূরুঙ্গামারী বাজারের কামার আব্দুল জব্বার ও আব্দুল্লাহ জানান, সারা বছরই আমাদের মোটামুটি বিক্রি হয়। তবে কোরবানি ঈদে বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি। এই সময় ভালোই আয় হয়। যা দিয়ে মুটামুটি ভাবে দিন চলে যায়।
ভুরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা ও কামারের দোকান মালিক রোকুনুজ্জামান কর্মকার জানান, করোনার কারনে দীর্ঘদিন দোকান বন্ধ ছিল কোরবানীর ঈদকে ঘিরে আবারও দোকান চালু করেছি। পশু জবাই থেকে শুরু করে কোরবানীর মাংস রান্নার চুড়ান্ত প্রস্তুতি পর্যন্ত দা, বটি, ছুরি, চাপাতি ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি প্রয়োজন হয়।বছরের অন্যান্য সময় কাজ কম থাকলেও এ সময়ে আমরা কর্মব্যস্ত হয়ে পড়ি।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকেরছড়া গ্রামের বাসিন্দা আমিনুর কর্মকার জানান, সারা বছরই কষ্ট করে চলতে হয়। কুরবানির ঈদ এলে আমাদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায়। ঈদের রাত পর্যন্ত নির্ঘুম কাটাতে হয়। একসময় এ পেশায় অনেক লোক ছিল কিন্তু এখন আগের মতো কাজের লোকও মিলছে না। বাপ-দাদার ব্যবসা কোনরকম টিকিয়ে রেখেছি।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙ্গা গ্রামের এরশাদ ও আনারুল জানান, ২৫০ টাকায় একটি চাকু কিনেছি। আর একটি দা ও একটি বটি ধার দিতে নিয়েছে ১৫০ টাকা। তারা বলেন মনে হচ্ছে দাম একটু বেশি তারপরও কি করবো সামনে ঈদ।
অন্যান্যরা জানান, কোরবানি ঈদে তারা প্রতিবছর দা, ছুরি, চাপাতিসহ বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করেন। তুলনামূলক ভাবে এবছর বেচা কেনা একটু কম।বর্তমানে লোহা ও কয়লার দাম অনেক বেড়েছে। সে তুলনায় কামার শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের দাম বাড়েনি। তাদের আশা, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ শিল্প আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন