কুড়িগ্রামে মোবাইল কিনে না দেয়ায় ৭ম শ্রেনীর ছাত্রের আত্মহত্যা

বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ছেলের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিলেন দিন মজুর বাবা আশরাফুল আলম। সেই স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হল আশরাফুল আলমের। শুধু এন্ড্রয়েড ভার্সন মোবাইল ফোন কিনে দিতে না পারায় তার আদরের সন্তান অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।

এ ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ টার দিকে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ার ছড়ার দক্ষিন কামালপুর এলাকায়। নিহত ফরহাদ হোসেন ছিলেন মঈনুল হক উচ্চ বিদ্যলয়ের সপ্তম শ্রেনির ছাত্র।

নিহতের চাচা শাহিন আলম জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে ফরহাদ হোসেন একটি এন্ড্রয়েড ভার্সন মোবাইল ফোন কিনে দেয়ার জন্য পরিবারকে চাপ দিয়ে আসছিল। দরিদ্র পরিবারে তার চাহিদা পুরণের সার্মথ না থাকায় তাকে অপেক্ষা করার জন্য বলে আসে। তার পরেও তার বাবা কাজের সন্ধানে কুমিল্লা গিয়ে কাজ করে টাকা সংগ্রহ করে তাকে মোইল কিনে দেয়ার জন্য প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু বাবার টালবাহনা কথা বিশ্বাস না করে বৃহস্পতিবার সকালে মায়ের ব্যবহৃত কাপড় পেঁচিয়ে নিজ ঘরের ধর্নায় গলায় ফাঁস দেয়। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে ফুলবাড়ী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।

ওই এলাকার সিদ্ধিক মিয়া জানান, বশত ভিটায় দুইটি ঘরে পরিবারকে নিয়ে বসবাস করেন আশরাফুল আলম। জমাজমিও নেই। ছেলের চাহিদা মিটার জন্য অনেকের কাছে টাকা ধার চেয়ে ছিল আশরাফুল । এর মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তার পরিবারে।

মঈনুল হক উচ্চ বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হাই জানান, ফরহাদ হোসেন ছিলেন মেধাবী ছাত্র। শুনেছি তাকে মোবাইল কিনে না দেয়ায় অভিমান করে আর্তহত্যা করেছে।

ফুলবাড়ী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন-অর-রশিদ জানান, গরীব পরিবারে দামি মোবাইল কিনে দেয়ার সামর্থ না থাকায় অভিমান করে ছেলে আর্তহত্যা করেছে।

ফুলবাড়ী হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: তামান্না জানান, রোগীকে নিয়ে আসার আগে মারা গেছে।

ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনর্চাজ ফজলুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্ডাম করার জন্য কুড়িগ্রাম মর্গে পাঠানো হয়েছে।