কুড়িগ্রামে ১৬ নদীর পানি বেড়েছে, আরও ২ জনের মৃত্যু

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। টানা চারদিন ধরে অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কুড়িগ্রামে ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।

সোমবার ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ১৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়া ব্রহ্মপূত্র নদের পানি বিপদসীমার ৬৮ সেন্টিমিটার ও নুনুখাওয়ায় দুধকুমোর নদীর পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভয়াবহ বন্যায় দুর্ভোগে পড়েছে প্রায় চার লাখ মানুষ।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী আমিনুল ইসলাম।

তিনি বলেন, কুড়িগ্রামে পানিতে ডুবে আরও দু’জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এ নিয়ে চলতি বন্যায় জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ১০জনে।

সোমবার মৃতরা হলেন ফুলবাড়ী উপজেলার ঘোগারকুটি এলাকার হালিমা বেগম (৩২) ও বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকার বানভাসা রহমান (৬৫)।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার ছক্কু মিয়া জানান, এখনও কুড়িগ্রাম-রংপুর মহাসড়কের উপর পানি থাকায় বিঘ্নিত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

অপর দিকে কুড়িগ্রাম-নাগেশ্বরী সড়কের পাটেশ্বরী, মধ্যকুমরপুর ও নাগেশ্বরী পেট্রোল পাম্পসহ চারস্থানে মহাসড়কের উপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

বিশেষ করে ফুলবাড়ী, নাগেশ্বরী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

ফুলবাড়ির বড়ভিটা ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন পরিষদে এখন থৈ থৈ পানি। এছাড়াও উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোড়কমণ্ডল গ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেরিবাঁধের ২০ ফুট অংশ ভেঙে গিয়ে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

বন্যার পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় ভেসে গেছে মৎস্য ঘের ও পুকুরের লাখ লাখ টাকার মাছ।

তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে হাঁস-মুরগীসহ জাগদেয়া পাট। বন্যায় ডুবে আছে কয়েকশ’ একর জমির ফসল।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানিয়েছেন, বন্যা মোকাবেলায় সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে ৫শ’ মেট্রিক টন চাল ও সাড়ে ১২ লাখ টাকা বন্যা দুর্গতদের জন্য বরাদ্দ দিয়েছি।

ঢাকা থেকে নতুন করে ২শ’ মেট্রিকটন চাল ও ৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ঢাকায় ত্রাণ অধিদফতরে কথা হয়েছে পর্যায়ক্রমে চাহিদা মাফিক ত্রাণ সহায়তা আসবে।