ক্ষমতা হাতে থাকলে পাহাড়েও নৌকা ভাসানো যায় : রিজভী


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের না পেয়ে তাদের মা, বোন, মহিলাদের ধরে নেয়া যাচ্ছে, হেনস্তা করা হচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত এজাহার বহির্ভূতই ৬৬৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, সজিব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন যে, আওয়ামী লীগ ২২০ আসন নিয়ে সরকার গঠন করবে। সেটা বাস্তবায়নের জন্যই মাস্টারপ্ল্যান করে বিএনপি নেতাদের প্রার্থিতা বাতিল এবং স্বয়ং এমপি প্রার্থীদেরকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। জামায়াতের নেতা বলে আরও ২২/২৩টি আসনের প্রার্থিতা বাতিল করার পরিকল্পনা চলছে। ইসি কর্তৃক তালিকা চূড়ান্ত করার পর প্রার্থিতা বাতিল চরম প্রতারণামূলক। এর দায় ইসিকেই নিতে হবে। মোট কথা ২৭/২৮ তারিখের মধ্যে এ পদ্ধতিতে বেশ কিছু আসনের জয় তারা নিশ্চিত করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘নৌকা মার্কার প্রার্থী চিত্রনায়ক ফারুক ঋণখেলাপী হয়েও প্রার্থী হয়েছেন, নির্বাচন কমিশন ও আদালত এক্ষেত্রে নির্বিকার। ফারুক নিজেই বলেছেন, তার ৩৬ কোটি টাকার লোন রিশিডিউলিং আবেদন কেন গ্রহণ করা হয়নি তা তিনি জানেন না। তাহলে তিনি বৈধ প্রার্থী হলেন কীভাবে? নৌকা মার্কার আরেক প্রার্থী ক্রিকেটার মাশরাফি সরকারি বেতনভুক্ত। অথচ তিনিও বৈধ প্রার্থী। অসংখ্য দণ্ডিত ও ঋণখেলাপি নৌকা মার্কার প্রার্থী। আসলে ক্ষমতা হাতে থাকলে পাহাড়েও নৌকা ভাসানো যায়।’
রিজভী বলেন, পুলিশ প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থেই নির্বাচন একতরফা করতে সকল শক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন মরণকামড় দিচ্ছে। ধানের শীষের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের চালুনি দিয়ে ছেঁকে তুলছে। সারাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দেয়া হচ্ছে তাদেরকে ধরার জন্য। নেতাকর্মীদেরকে না পেয়ে মহিলা সদস্যসহ পরিবারের লোকজনদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং কোথাও কোথাও বিএনপি নেতাকর্মীকে না পেয়ে স্ত্রী ও সন্তানদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, আজ থেকে বিএনপি, ২০ দলীয় জোট ও ঐক্যফ্রন্টের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অপারেশনের মাত্রা বাড়ানো হবে। এক্ষেত্রে বিজিবি ও র্যাবকে বিএনপি নেতাকর্মীদের লিস্ট সরবরাহ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সারাদেশের স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওয়ার্ড থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের তালিকা স্থানীয় থানায় ইতোমধ্যে জমা দিয়েছে, সেই তালিকাগুলোই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন বিজিবি ও র্যাবের কাছে সরবরাহ করছে। সরবরাহ করা তালিকা ধরে ধরে আজ রাত থেকেই নাকি নেতাকর্মীদের আটক করা হবে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ধানের শীষের পোলিং এজেন্ট হিসেবে যাদেরকে মনোনীত করা হবে তাদের নির্বাচনের দুই একদিন আগেই গ্রেপ্তার করা শুরু হবে।
আমরা বিভিন্ন সূত্রে আরও জানতে পেরেছি, ডিএমপির সকল থানার ওসিরা সিল মারার জন্য প্রাপ্ত তালিকাভুক্ত আওয়ামী কর্মীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন এবং নির্দেশনা দিচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার, সহ-দফতর সম্পাদক মুনির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন