খাগড়াছড়ির পানছড়ি দমদম গ্রামীণ সড়কে চরম দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলা দমদম গ্রামীণ সড়কে হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। জেলার পানছড়ির ৩নং ইউনিয়নের দমদম গ্রামের আন্ত: প্রধান সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পানছড়ির ৩নং পানছড়ি ইউনিয়নের দমদম গ্রামে মানুষের চলাচলের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত একটি গ্রামীণ রাস্তা এখন যেন দুর্ভোগের নামান্তর।
পানছড়ি বাজার থেকে শনটিলা পর্যন্ত প্রায় ৩কিলোমিটার দীর্ঘ এই গ্রামীণ রাস্তার বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে বর্ষাকালে যা রূপ নেয় হাঁটু পানির পুকুরে। পানছড়ি বাজার থেকে শনটিলা পর্যন্ত প্রায় ৩কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন হাজারো মানুষ। কিন্তু দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বর্তমানে তা যানবাহন ও পথচারীদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন প্রায়ই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে যাত্রীদের গর্ত পার করতে গাড়ি ঠেলেও নিতে হয়।
রাস্তার বিভিন্ন অংশে খানাখন্দ ও গর্তে ভরপুর, যার ফলে প্রতিদিন এ পথে চলাচলরত মানুষজনের জন্য তা হয়ে উঠেছে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে বর্ষাকালে রাস্তার অনেক অংশেই জমে থাকে হাটু সমান পানি। এতে পথচারী থেকে শুরু করে যানবাহনের যাত্রীরা প্রতিনিয়ত পড়ছেন বিপাকে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, এই সড়ক ব্যবহার করে প্রতিদিন চলাচল করে হাজারো মানুষ। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহন চলাচল করলেও রাস্তাটি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে, প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। গর্তে পড়ে যানবাহনের চাকা আটকে যাওয়া, যাত্রী পড়ে যাওয়া কিংবা যান বিকল হওয়া যেন নিত্যদিনের ঘটনা।
রাতে এই রাস্তায় চলাচল আরো ভয়ংকর হয়ে ওঠে। চারপাশে অন্ধকার আর খানাখন্দের কারণে ছোট একটি অসাবধানতা বড় দুর্ঘটনার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই অবস্থায় জরুরি প্রয়োজনে রাতের বেলায় চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভূক্তভোগী স্থানীয়রা জানান, রাতের বেলায় এই রাস্তা দিয়ে চলা আরও বিপজ্জনক। চারপাশের অন্ধকার, পাহাড়ি এলাকা এবং রাস্তার বেহাল দশা মিলিয়ে চলাচল এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়ে।
প্রত্যক্ষ সরেজমিনে দেখা গেছে, রাস্তার একপাশে পাহাড় আর অন্যপাশে বসতবাড়ির কারণে উন্নয়ন কাজে কিছুটা জটিলতা থাকলেও স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘ সময় ধরে অবহেলার কারণেই এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অথচ প্রতিদিন প্রায় আট-নয় হাজার মানুষ এই সড়ক ব্যবহার করেন।
সরেজমিনে ঘুরে আরো দেখা গেছে, রাস্তার একপাশে পাহাড় কাটা ও অন্যপাশে বসতবাড়ি হওয়ায় রাস্তার উন্নয়ন কাজে নানান জটিলতা তৈরি হয়েছে। কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকায় রাস্তাটির এই দুরাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। অথচ প্রতিদিন প্রায় আট থেকে নয় হাজার মানুষ এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে।
অটোরিকশা চালক ফারুক হোসেন জানান, “অল্প বর্ষায় পানি জমে যায়। গাড়ি গর্তে পড়ে বিকল হয়ে যায়। যাত্রীদের নামিয়ে ঠেলে নিতে হয়।”
স্থানীয় বাসিন্দা আলমগীর হোসেন বলেন, “এই অযোগ্য রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করাটা এখন দুঃস্বপ্ন। একটু অসাবধান না হলেই বিপদ।”
স্থানীয়দের জোর দাবি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন দ্রæুত রাস্তাটি সংস্কার করে মানুষের চলাচলের উপযোগী করে তোলে। তা না হলে সামান্য বৃষ্টিতেই পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে।
মোটর সাইকেল চালক মো: মফিজ মিয়া বলেন, “বর্ষাকালে রাস্তায় পানি জমে থাকে, গর্তে গাড়ি পড়ে বিকল হয়ে যায়। অনেক সময় যাত্রীদের নামিয়ে গাড়ি ঠেলে গর্ত পার করতে হয়। আমরা খুব কষ্ট করে এ রাস্তা দিয়ে চলি।”
স্থানীয় গ্রামবাসী মো: হোসাইন বলেন, “পানছড়ি বাজারে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই, অথচ এই রাস্তা দিয়ে হাঁটতেই ভয় লাগে। একটু অসাবধান হলেই পড়ে যেতে হয়। কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, রাস্তাটি দ্রæত সংস্কার করুন।”
স্থানীয়দের প্রাণের দাবি, অবিলম্বে রাস্তাটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তুলুক সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। না হলে সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাটি আরও ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে, যা জনজীবনকে করে তুলবে আরও দুর্বিষহ।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন