পানছড়িতে পিসিজেএসএস’র সশস্ত্র গোষ্ঠীর তৎপরতার প্রতিবাদে
খাগড়াছড়ির সাজেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার পানছড়ি উপজেলাতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-পিসিজেএসএস(সন্তু)-এর সশস্ত্র গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ ও হুমকিমূলক অপতৎপরতার প্রতিবাদে সাজেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বাঘাইছড়ি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটি।
“পাহাড়ে বিভেদ ও সংঘাত সৃষ্টির হোতা থলের বিড়াল আবুল হাসনাত-সন্তু’র কুয়াকাটায় নতুন ষড়যন্ত্র, রুখে দাঁড়াও জনতা” শ্লোগানে বৈ-সা-বি উৎসব লগ্নে খাগড়াছড়ির পানছড়িতে পিসিজেএসএস(সন্তু)-এর সশস্ত্র গোষ্ঠীর অনুপ্রবেশ ও হুমকিমূলক অপতৎপরতার প্রতিবাদে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাঘাইছড়ি ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত প্রতিরোধ কমিটি।
সোমবার (২৭শে মার্চ) সকাল ১০টায় সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাটের রেতকাবা দপদা এলাকায় এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের জন্য সন্তু লারমার প্রতি আহবান জানানো হয়েছে।
মিছিল পরবর্তী অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকামা।
বিপুল চাকমার সঞ্চালনায় সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরো বক্তব্য রাখেন ৫নং বঙ্গলতলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি চাকমা, সাজেক ইউনিয়নর কার্বারী এসোসিয়েশনের সভাপতি নতুন জয় চাকমা, গুরিময় চাকমা ও বিধান চাকমা প্রমুখ।
সমাবেশে বঙ্গলতলী ইউপি চেয়ারম্যান জ্ঞান জ্যোতি চাকমা বলেন, পাহাড়ে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ না হলে আমাদের বেঁচে থাকার কোন পথ নেই। তিনি অবিলম্বে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধ করে সকলকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য সন্তু লারমার প্রতি আহ্ববান জানানো হয়েছে।
কার্বারী নতুন জয় চাকমা বলেন, সরকার সন্তু লারমার সাথে ১৯৯৭সালে যে চুক্তি করেছে তা দীর্ঘ ২৬বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও এখনো বাস্তবায়ন হয়নি বরং পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টি হয়েছে। তিনি সকল জুম্ম রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্ববান জানান।
সমাবেশে বিধান চাকমা বলেন, ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত জাতির জন্য কোন দিন মঙ্গল বয়ে আনবে না। অবিলম্বে এ সংঘাত বন্ধ না হলে আমাদের জাতির অস্তিত্ব ধংসের মুখে পড়বে।
তিনি আরো বলেন, সরকার তথা শাসকগোষ্ঠি পার্বত্য চট্টগ্রামকে নিয়ে নানা চক্রান্তে মেতে উঠেছে। সম্প্রতি কুয়াটাকায় আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ্’র নেতৃত্বে সন্তু লারমার সাথে বৈঠকের পরপরই খাগড়াছড়ির পানছড়িতে পিসিজেএসএস-এর একটি সশস্ত্র গ্রুপের অবস্থান নেয়াটাও সেই চক্রান্তেরই অংশ। শাসকগোষ্ঠি চায় পাহাড়িরা ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতে লিপ্ত থাকুক। তাই শাসকগোষ্ঠির জুম্ম দিয়ে জুম্ম ধ্বংসের নীলনক্সা এই ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং সকল চক্রান্ত ভেস্তে দিতে হবে।
সমাবেশের সভাপতি সাজেক ইউপি চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা বলেন, ভ্রাতৃঘাতি সংঘাতের কারণে আজ পুরো পার্বত্যবাসী জিম্মি হয়ে পড়েছে। এই সংঘাত বন্ধ না হলে জাতি আরো মহা সংকটে পতিত হবে। তাই অচিরেই এ সংঘাত বন্ধ হওয়া দরকার। তিনি অবিলম্বে ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সন্তু লারমাসহ সংশিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে আরো উপস্থিত থাকেন সাজেক ইউনিয়নের মেম্বার সুমিতা চাকমা, দয়াধন চাকমা, পরিচয় চাকমা ও বঙ্গলতলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার শুভ শান্তি চাকমা প্রমুখ।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তারা ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের দাবি জানিয়ে ও ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগান দেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন