খালেদা জিয়াকে প্রেসক্লাবে ইফতারে আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2017/06/photo-1497278640.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের ইফতার অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আসতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের নেতারা।
আজ সোমবার প্রেসক্লাবে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএফইউজে একাংশের সভাপতি শওকত মাহমুদ।
শওকত মাহমুদ বলেন, আগামী ২১ জুন বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএফইউজের ইফতার মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপারসন অংশ নেওয়ার সম্মতি জানিয়েছেন। কিন্তু ক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটি নিরাপত্তার কারণে খালেদা জিয়াকে ক্লাব চত্বরে ইফতার মাহফিলে আসতে দেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি বর্তমান ক্লাবের কর্তৃপক্ষের এহেন সিদ্ধান্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের দীর্ঘদিনের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও ভাবমূর্তিকে চরমভাবে নসাৎ করেছে।’
বিএফিইউজে সভাপতি আরো বলেন, ‘গোয়েন্দা সংস্থা ও ডিএমপি কমিশনারের দোহাই দিয়ে দেশনেত্রীকে প্রেসক্লাবে আগমনে বাধা দেওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা আশা করি, সব মতপ্রকাশের মঞ্চ হিসেবে বিবেচনা করে ক্লাবের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের স্বার্থে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের তিনতলায় কনফারেন্স হলে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে শওকত মাহমুদ বলেন, গোয়েন্দা সংস্থা ও ডিএমপি কমিশনারের দোহাই দিয়ে খালেদা জিয়ার প্রেসক্লাবে আগমনে বাধা দেওয়া কোনোভাবে কাম্য নয়। তিনি প্রতিদিনই সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ, পূর্বাণী হোটেলসহ রাজধানীর কোনো না কোনো স্থানে ইফতার মাহফিলে অংশ নিচ্ছেন। কোথাও নিরাপত্তার সমস্যা হয়নি। সাংবাদিক নেতা বলেন, ‘তাই ক্লাব কর্তৃপক্ষের এটা খোড়া অজুহাত বলে আমরা মনে করি। খালেদা জিয়াকে গত বছর ক্লাবের দখলদার কমিটি আসতে বাধা দিয়েছে। বর্তমান নির্বাচিত কমিটির কাছ থেকে এমন আচরণ আমরা কোনোভাবে আশা করিনি।’
শওকত মাহমুদ বলেন, ‘জাতীয় প্রেসক্লাব দীর্ঘদিনের একটি জাতীয় গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। এখানে গণতান্ত্রিক দলের নেতা-নেত্রীদের আসার দ্বার উন্মুক্ত। স্বৈরাচার এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়ে দুই নেত্রী খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা বারবার এই ক্লাবে এসেছেন এবং বিভিন্ন কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমি খুব ব্যথিত হয়েছি ক্লাবের এই সিদ্ধান্তে যে বেগম খালেদা জিয়াকে এখানে আসতে দেওয়া হবে না। এটা জাতীয় প্রেসক্লাবের ভাবমূর্তিকে দারুণভাবে ভুলণ্ঠিত করেছে। আমি বলি, জাতীয় প্রেসক্লাব হলো, আইল্যান্ড অব ডেমোক্রেসি, ওশেন অব অটোক্রেসি। নব্বইয়ের গণআন্দোলনের সময়ে সারা বাংলাদেশে যখন দাঁড়ানোর জায়গা ছিল না, তখন সব রাজনীতিবিদ, শিল্পী, বুদ্ধিজীবী সবাই আসতেন এই প্রেসক্লাবে। সেই ক্লাবের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হলো দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলের নেত্রীর জন্য। এটা খুব দূঃখজনক এবং আমি এর নিন্দা করছি। অনুরোধ করছি, প্রেসক্লাব কমিটি তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে সার্বজনীন গণতান্ত্রিক ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনবে। ৯০ সালে দাবি উঠেছিল, প্রেসক্লাবকে ডেমোক্রেসি স্কয়ার হিসেবে নামকরণ করার জন্য, এই ডেমোক্রেসি স্কয়ারে স্বৈরতন্ত্রের ছায়া দেখতে পাচ্ছি আমরা।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, ‘নিরাপত্তার প্রশ্ন দেখানোর বিষয়টি খোঁড়া যুক্তি, হাস্যকর। আমি ও আমাদের আরেকজন শ্রদ্ধেয় সদস্য জনাব হাসান হাফিজ ব্যবস্থাপনা কমিটির বৈঠকে বার বার বলেছি, কিন্তু আমাদের বক্তব্য আমলেই নেওয়া হয়নি। অত্যন্ত হাস্যকরভাবে তারা এই অবস্থান নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আমরা অসহায় হয়ে বা ব্যর্থ হয়ে যাই বলুন না কেন প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা সভা থেকে ওয়াক আউট করে চলে এসেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী বক্তব্য দেন। এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান উপস্থিত ছিলেন।
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন