খালেদা জিয়া কি এবার নির্বাচন করতে পারবেন?

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এরই মধ্যে দুর্নীতির দুই মামলায় সাজা হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার। সংবিধানে সংসদে নির্বাচিত হবার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি সংসদের সদস্য নির্বাচিত হইবার এবং সংসদ-সদস্য থাকিবার যোগ্য হইবেন না, যদি তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোন ফৌজদারী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হইয়া অন্যূন দুই বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তাহার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বৎসরকাল অতিবাহিত না হইয়া থাকে।’

এ অবস্থায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি যদি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয় তাহলে বেগম খালেদা জিয়া এ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কি-না স্বভাবতই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলামের বক্তব্য, খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন কি-না, তা নির্ভর করবে আদালতের ওপর। উচ্চ আদালত নির্দেশ দিলে তিনি নির্বাচন করতে পারবেন।

সুনির্দিষ্টভাবে খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, এটা যেকোনো নাগরিকের জন্য প্রযোজ্য।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এটা আদালতের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করবে। শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার কথা বলছি না, সবার জন্য বলছি, যদি কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হতে চান, কোনো দণ্ডে দুই বছরের বেশি দণ্ডিত হয়েছেন পূর্বে, এরকম কোনো লোক একটি নির্দিষ্ট সময় পার না হলে প্রার্থী হতে পারেন না। যারা এখন দণ্ডিত হয়ে দণ্ড ভোগ করছেন, তাদের ক্ষেত্রে দণ্ডটার যদি আপিল না থাকে, আপিলে যদি তাকে নির্বাচনে একেবারে অযোগ্য করার ঘোষণার বিষয়টা যদি নির্দিষ্ট করা না থাকে, তাহলে উনারা কিন্তু নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু যদি বলা থাকে আপিলে সাজাটাকে স্থগিত করা হয়নি, তাহলে কিন্তু আমাদের পক্ষ থেকে তাকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেয়া সম্ভব হবে না।’

‘কিন্তু উনারা আবারও আদালতের কাছে যেতে পারেন। আদালত বিচার-বিশ্লেষণ করে উনার প্রার্থিতা বহাল রাখতেও পারেন।’

সোমবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। রায়ে বেগম জিয়াকে ৭ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এখন পর্যন্ত কিন্তু আমরা জানি না, উনি আপিল করবেন কি না। আপিল করলে সেখান থেকে কী ধরনের রায় আসবে। আপিল গ্রহণ করা হলো, এটুকু বলেই ছেড়ে দেয়া হলো। আপিল সম্পর্কে কোনো বক্তব্য বললেন না। সেই ক্ষেত্রেও উনার একটা সুযোগ থেকে যাবে। উনাদের মতো লোকদের একটা সুযোগ থেকে যাবে। আদালতে আশ্রয় নিয়ে আদালত থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া, উনি যোগ্য কি যোগ্য না। এটা আদলত নির্ধারণ করে দেবেন। আমরা সংবিধানের বাইরে যাবো না।’

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলমান ৩৬ মামলার মধ্যে আজ দ্বিতীয় মামলার রায় এলো। এরআগে দুর্নীতির আরেক মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর।

আইনি কাঠামো না পেলে ইভিএম ব্যবহারের প্রশ্ন আসে না

ইভিএম প্রসঙ্গে রফিকুল ইসলাম বলেন, যদি আইনি কাঠামো না পায়, তাহলে সংসদ ভোটে ইভিএম ব্যবহার করার প্রশ্নই আসে না। আইনি কাঠামো পেলে মিনিমাম হলেও ইভিএম ব্যবহার করা হবে।

নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই উল্লেখ করে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করে যেতে পারবো।

সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলার প্রয়োজনে যদি সেনা বাহিনী নির্বাচনে আনতে হয় তাহলে আমরা আনবো। এটা প্রতিটি নির্বাচনেই হয়। সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করে।