গভীর রাত পর্যন্ত জেগে মাঠ পর্যায়ে কাজ করেন দিনাজপুরের এসপি
শাহ ইফতেখার আহমেদ (পিপিএম-সেবা) পুলিশ সুপার হিসেবে গত ২০২২ সনের ২৩ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে দিনাজপুর জেলায় যোগদান করেন। চলতি বছরের ২৩ আগষ্ট তাঁর পুলিশ সুপার পদে কর্মজীবনের এক বছর পূর্তি। তিনি তাঁর পূর্বসূরি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন (বিপিএম-সেবা, পিপিএম-বার) এর কাছ থেকে দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। তিনি দায়িত্ব গ্রহনের পর থেকেই সততা ও নিষ্ঠার পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন। বিনা টাকায় পুলিশে চাকুরী, নিরলস দায়িত্ব পালন, হিংসা বিদ্বেষের উর্ধ্বে থেকে সর্বস্তরের মানুষের মাঝে সেবা দিয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। জেলা পুলিশকে তিনি ঢেলে সাজিয়েছেন। গভীর রাত পর্যন্ত জেগে মাঠ পর্যায়ের সকল বিষয়ে খোঁজ খবর রাখেন তিনি।
জেলায় যোগদানের সাথে সাথে তিনি মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিবাহ ও নারী-শিশু নির্যাতনের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেন এবং অনেকগুলো ইতিবাচক কর্মকান্ডে জনমনে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেন। তিনি অনেকটাই প্রমাণ করেছেন পুলিশ জনগণের বন্ধু। এ জেলার কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম বেগবান করেন। এই জেলায় আসার প্রথমেই তিনি দিনাজপুর জেলাকে মাদক, সন্ত্রাস, বাল্য বিবাহ ও শিশু নির্যাতনসহ সামাজিক অপরাধমুক্ত করণে দৃশ্যমান করার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছেন।
ব্যক্তিগত জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বুঝতে পেরেছেন, যে মাদক ভয়াবহ রুপ ধারণ করে বর্তমান সমাজের প্রতিটা রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পরেছে। তাই শুধুমাত্র শাস্তি দিয়ে কিছুতেই মাদক সমূলে নির্মূল করা সম্ভব নয়। আর এজন্য তিনি দিনাজপুর জেলাকে মাদকমুক্ত করতে কিছু ভিন্ন পন্থা অবলম্বন করেছেন। তিনি সুশীল সমাজের সহযোগিতায় বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সাংস্কৃতিক কর্মীদের নিয়ে জেলার জনবহুল এলাকা, হাট বাজারগুলোতে মাদকবিরোধী প্রচারণা অব্যাহত রেখেছেন। পাশাপশি তিনি ‘মাদক বিক্রেতা ও মাদক সেবনকারীদের এ পথ থেকে সরে না আসলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে’ বলে হুশিয়ার করে দিচ্ছেন।
এছাড়াও পুলিশ সুপারের কঠোর অবস্থানের ফলে দিনাজপুর জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অন্যান্য জেলার চেয়ে স্বাভাবিক রয়েছে বলে জেলাবাসী বিশ্বাস করেন। জেলাবাসীর বিশ্বাস, পুলিশ সুপার হয়তো একদিন পদোন্নতি পেয়ে আরো উচ্চতায় পৌঁছে যাবেন। পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ একজন সাংবাদিক বান্ধব পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবেও জেলায় রয়েছেন শীর্ষ অবস্থানে। জেলার সাংবাদিকদের সাথে রয়েছে তার সুসম্পর্ক। সাংবাদিকরাও মন খুলে তার সাথে মতামত ব্যক্ত করতে পারেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে। মাদক আমাদের সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মাদক নামক ভয়াবহ ব্যাধি ও যুব সমাজ কে রক্ষা করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। বাংলাদেশ পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। মাদকের সাথে কোন আপোষ নেই, মাদককে কোনভাবেই ছাড় ছাড় দেয়া যাবেনা। চাকুরী জীবনে আমি কখনো মাদকের সাথে আপোষ করিনি ভবিষ্যতেও করবোনা। যুব সমাজকে রক্ষায় জেলায় মাদকবিরোধী বিশেষ অভিযান অব্যহত থাকবে।
এসপি আরও বলেন, ‘দেখতে দেখতে দায়িত্বের এক বছর কেটে গেছে। অনেক বড় জেলা হিসেবে এ জেলায় অপরাধ প্রবনতা তুলনামূলক কম, মানুষজনও শিক্ষিত ও সচেতন। তাই সবকিছুই বিশেষ ভাবে পর্যবেক্ষণে রেখে কাজ করে যাচ্ছি। পুলিশের নিয়মিত কাজের পাশাপাশি জেলা পুলিশকে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। যত দিন এ জেলায় থাকছি, প্রতি মুহুর্তই আমি আমার দায়িত্ব সর্বোচ্চ নিষ্ঠার সাথে পালন করে যাব।’
উল্লেখ্য যে, দিনাজপুর জেলার সদরে অবস্থিত এশিয়া তথা দক্ষিন এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদগাহ ময়দান। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ও বিদেশ থেকে এ বৃহৎ জামায়াতে অংশ নেন লাখ লাখ মানুষ। স্থানীয় সাংসদ ও মহান জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি,জেলা প্রশাসক শাকিল আহম্মেদ ও এসপি ইফতেখার আহম্মেদ মুসল্লিদের নামায আদায়,নিরাপত্তা, বিশুদ্ধ পানি পান, অজুর স্থান, প্রতিটি প্রবেশ দ্বারে স্ক্যানার, পুলিশ ও র্যাব-১৩ সমন্বয়ে ওয়াচ টাওয়ার বিভিন্ন অগ্রিম প্রস্তুতি, রুট ম্যাপ করে গাড়ি পার্কিং এসব দেখে যেন মনেই হবে না কোন এক মফস্বল শহরের আয়োজন এটি। দিনাজপুর বাসী চান এসপি থাকুক আমাদের মাঝে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন