গাইবান্ধায় চিকিৎসকদের অবহেলায় রোগীর মৃত্যুতে হাসপাতালে ভাংচুর
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে রুগীর প্রতি চিকিৎসকদের দায়িত্বের অবহেলার মাত্রা দিন দিন বেড়েই চলছে। গত রোববার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে এক রোগীর অবহেলিত মৃত্যু হওয়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে।
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের আরএমও হারুন অর সহ কিছু চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের ঠিকমতো পর্যবেক্ষন না করে দায়িত্বে অবহেলা করছে।
কোনো প্রয়োজনে ভর্তিকৃত রোগীর স্বজনরা জরুরী বিভাগের ডাক্তারদের ডাকতে গেলে তারা ডিউটিতে নাই সহ বিভিন্ন অজুহাত প্রদর্শন করে। এতে করে অবহেলায় পড়ে রোগী সহ রোগীদের স্বজনরা। আর প্রতিবাদ করতে গেলেই হয় ডাক্তার কর্তৃক নির্যাতন সহ মিথ্যা মামলার শিকার। উদ্বর্তন কতৃপক্ষ যেন অন্ধ।
জানা গেছে- গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে জরুরী বিভাগে হামলা মারপিট ও ভাংচুুরের ঘটনা ঘটেছে। রোববার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে।
হাসপাতাল কতৃপক্ষ জানান, রোগীর মৃত্যুর পর তার স্বজন ও বহিরাগতরা কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স সহ অন্যদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর ও ভাংচুর করে। তবে এ ব্যাপারে পাল্টা অভিযোগও পাওয়া গেছে।
রোগীর স্বজনরা জানান, প্রতিবাদ করলে কর্তৃপক্ষের লোকজন তাদের ওপর চড়াও হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান , গাইবান্ধা সদরের বোয়ালী ইউনিয়নের পশ্চিম বাটিকামারী গ্রামের আলতাফ হোসেনের স্ত্রী জাহেদা বেগম (৫৫) কে মুমুর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্বজনরা। কিন্তুু দুপুরে যথারীতি হাসপাতালের ল্যাব বন্ধ থাকায় তাদের বাইরে রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। রক্ত পরীক্ষা করার পর বিকেলে তাকে আবার হাসপাতালে আনা হয়। পরবর্তীতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তারা আরো জানান- রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসলে তিনি রিপোর্টে রক্ত স্বল্পতার কারণ দেখিয়ে রক্ত সংগ্রহের কথা বলেন। তারা রক্ত যোগার ও ক্রসম্যাচ করে এনে জানতে পারেন জাহেদা মারা গেছেন। হাসপাতালে ভর্তি না করায় চিকিৎসার অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
তবে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুজন পাল জানান, রোগীর রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকায় তার অবস্থা আগে থেকেই সংকটাপন্ন ছিল। সেই সময় ল্যাব বন্ধ থাকায় বাইরে থেকে রক্ত পরীক্ষার জন্য বলা হয়। তারা ফেরার পর রোগীর মৃত্যুর কথা শুনে উত্তেজিত হয়ে জরুরী বিভাগে হামলা চালিয়ে কর্তব্যরত নারী চিকিৎসকসহ দুই চিকিৎসক , শিক্ষানবিস নার্স এবং অন্য কর্মীদের বেধড়ক মারপিট করে। তারা জিনিসপত্রও ভাংচুর করে।
এদিকে এই ঘটনার পর প্রায় তিন ঘন্টা চিকিৎসা বন্ধ করে চিকিৎসকরা হামলাকারীদের শাস্তি দাবী করেন। তারা করোনাকালে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবাদানকারী চিকিৎসকদের এই লাঞ্ছনা ও মারপিটের বিচার দাবি করেন।
অন্যদিকে হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্বাবধায়ক ডাঃ তাহেরা আক্তার মনি বলেন, সাধারন মানুষের যাতে কোন কষ্ট না হয় সেজন্য জরুরী বিভাগ চালু রাখা হয়েছে। আগামীকাল সকালে চিকিৎসকরা সভা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহন করবেন।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি অপারেশন রজ্জব আলী সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন