গুপ্তধনের খোঁজে মিরপুরে এলাহী কারবার
গুপ্তধন মিলবে-এমন গুঞ্জনে রাজধানীর মিরপুরের একটি বাড়িতে এলাহী কাণ্ড চলছে। নিচে দুই মণের বেশি স্বর্ণালঙ্কার ও দামি জিনিসপত্র থাকতে পারে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর মেঝে খুঁড়ে সেই কথিত মূল্যবান ধাতু বের করে আনার চেষ্টা চলছে। পুলিশ বাড়িটির চারপাশ ঘিরে রেখেছে। আর বাড়ির নিচে গুপ্তধনের খবর পেয়ে উৎসুক লোকজন ভিড় করছেন সেখানে।
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট আনোয়ারুজ্জামানের নেতৃত্বে মিরপুর-১০ নম্বর সেকশনের সি ব্লকের ১৬ নম্বর সড়কের ১৬ নম্বর বাড়িতে খোঁড়া শুরু করেন ২০ শ্রমিক বাড়িতে। খবর পেয়ে বাড়িটির আশপাশে ভিড় করেছেন শতশত উৎসুক মানুষ।
ওই বাড়ির মালিকের নাম মনিরুল আলম। গত ১৪ জুলাই তিনি মিরপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এতে বলা হয়, বাসার মাটির নিচে গুপ্তধন রয়েছে বলে এলাকার লোকজন গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এ কারণে বাড়িটির সামনে প্রতিদিন লোকজন ভিড় করছেন। যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
বাড়িটি খননে কোনো আপত্তি নেই। খননের খরচও বহন করবেন জানিয়ে মনিরুল বলেন, যদি সত্যি সত্যি গুপ্তধন পাওয়া যায়, তাহলে তা বেওয়ারিশ সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া বিধি মোতাবেক তা সরকারি কোষাগারে জমা হবে।
জিডির কথা উল্লেখ করে পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ সদরের বাসিন্দা তৈয়ব নামে এক ব্যক্তি মিরপুর থানায় আরও একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনিও ওই বাড়িতে গুপ্তধন থাকার কথা জানান।
এই ডায়েরিতে বলা হয়, বাড়ির মূল মালিক দিলশাদ খান। তিনি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান চলে যান। দিলশানের দূরসম্পর্কের আত্মীয় সৈয়দ আলম তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আলমও পাকিস্তানে থাকেন। মাঝে মধ্যে দেশে আসেন। বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। আলম তাকে তথ্য দেন, মিরপুরের ওই বাড়িটির নিচে দুই মণের বেশি স্বর্ণালঙ্কার ও দামি জিনিসপত্র রয়েছে।
পাকিস্তানে থাকাকালে আলমকে ওই তথ্য দেন দিলশাদ। এরপর আলমকে নিয়ে তৈয়ব মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা এ সম্পদ দখলে নিতে টেকনাফ থেকে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় আসার পর তৈয়বকে আড়ালে রেখে গোপনে বাড়িটির বর্তমান মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আলম। তারা মাটির নিচের সম্পদ হাতিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করেন।
বিষয়টি টের টেয়ে তিনি মনিরুল পূর্ব পরিচিত রাবেয়া চৌধুরী নামে এক নারীকে নিয়ে থানায় যান। তারা বিষয়টি জানিয়ে জিডি করার সিদ্ধান্ত নেন।
গুপ্তধনের খোঁজ পেতে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাড়িটি খোঁড়া শুরু করা হয়। বাড়িটিতে মোট আটটি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে চারটি কক্ষ চার ফুট করে খনন চলছে। মোট পাঁচটি কক্ষ আট ফুট করে খোঁড়া হবে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দাদন ফকির জানান, ওই ব্যক্তির বাড়ির মাটির নিচে ‘মূল্যবান বস্তু’ রয়েছে এ মর্মে দুই ব্যক্তির জিডির (সাধারণ ডায়েরি) পরিপ্রক্ষিতে ওই খনন কাজ চলছে। খনন কাজ শেষে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন