ঘূর্ণিঝড় ডানার আতঙ্কে বাগেরহাটের শরণখোলার বেড়িবাঁধের বাইরের ৫শতাধিক পরিবার

ঘূর্ণিঝড় ডানা’র প্রভাবে বাগেরহাটের শরণখোলাসহ সুন্দরবন অঞ্চলে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ভোর থেকে বেড়েছে বাতাসের গতি। থেমে থেমে হচ্ছে ভারি বৃষ্টি।

ঘূর্ণিঝড় ডানা আতঙ্কে রয়েছে সিডর বিধ্বস্ত শরণখোলা উপজেলার বেড়িবাধের বাইরে বলেশ্বর নদের তীরে বসবাসকারী পাঁচ শতাধিক পরিবার। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত প্রায় ১০ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিলো উপজেলার সর্বত্র।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব থেকে জানমাল রক্ষা ও করণীয় বিষয়ে জরুরি সভা করেছে উপজেলা প্রশাসন। সভায় প্রাথমিক সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে।

বনবিভাগ জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্ব সুন্দরবনের দুবলার চর, শ্যালার চর, কচিখালী অভয়ারণ্য কেন্দ্রসহ তুলনামূলক নিচু এলাকার বনভূমি প্লাবিত হয়েছে। স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে স্থানীয় নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে এক থেকে দেড় ফুট।

বেড়বাঁধের বাইরে বসবাসকারী সাউথখালী ইউনিয়নের উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের বাসিন্দা মোশাররফ হাওলাদার, বিউটি বেগম ও মহসিন হোসেন জানান, ঝড়ের খবরে তারা আতঙ্কে আছেন।

খুড়িয়াখালী গ্রামের সমাজসেবক মো. রাসেল আহমেদ জানান, সাউথখালী ইউনিয়নের খুড়িয়াখালী, সোনাতলা, চালিতাবুনিয়া, বগী গ্রামের বেড়িবাঁধের বাইরে পাঁচশোর বেশি পরিবার রয়েছে। জলোচ্ছ্বাস তীব্রতা বেশি হলে তাদের বাড়িঘর তলিয়ে যাবে।

শরণখোলা উপজেলা ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) রায়েন্দা ইউনিয়নের টিম লিডার ওহিদুজ্জামান ডালিম জানিয়েছেন, তাদের সকল ইইনিটের সেচ্ছাসেবকরা বলেশ্বর নদের তীরে বসবাসকারী পরিবার ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের প্রস্তুত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। সব ইউনিটের সেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রয়েছেন।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলা বিশেষ টহল ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ফরেস্ট রেঞ্জার) মো. খলিলুর রহমান জানান, জোয়ারের পানিতে দুবলার চর, শ্যালার চরসহ বনের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উত্তাল রয়েছে বঙ্গোপসাগর। বনরক্ষীরা সবাই নিরাপদে আছেন।

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) শেখ মাহাবুব হাসান বলেন, আমাদের রেঞ্জের আওতায় ১৮টি বন অফিসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই নিরাপদে আছেন। এছাড়া এসব অফিসে বনবিভাগের জলযানগুলো যাতে ঝড়-জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য অফিসের নিকটবর্তী খালগুলোর নিরাপদ স্থানে শক্ত করে বেধে রাখা হয়েছে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুদীপ্ত কুমার সিংহ বলেন, উপজেলার স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারসহ শতাধিক আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তত হয়েছে। এছাড়া শুকনা খাবারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুদ রাখা হয়েছে।