ঘোমটা পরা মহিলারাই রাজ্যের গর্ব : বিজেপি’র মুখ্যমন্ত্রী
দিন কয়েক আগে গরিবদের চিহ্নিত করতে গিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন রাজস্থানের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে। গরিবদের বাড়িতে হলুদ রঙ করে দেয় সরকার। লেখা হয়, ‘আমি গরিব পরিবারের সদস্য এবং জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনের আওতায় সরকার থেকে রেশন গ্রহণ করেছি।’ আর এবার বিজেপিশাসিত হরিয়ানায় রাজ্য সরকার রীতিমতো বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দিল ‘ঘোমটা পরা মহিলারা রাজ্যের গর্ব।’ সরকারের এই বিজ্ঞাপনকে ঘিরে রাজ্যে জুড়ে এখন বিতর্ক তুঙ্গে। হরিয়ানার সরকারের ‘পশ্চাদপদ ও পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা’র তীব্র সমালোচনা করেছে বিরোধী দলগুলি। এই বিষয়ে মুখ খুলেছেন হরিয়ানার পদকজয়ী কুস্তিগীর গীতা ফোগাটও।
পুরুষ-মহিলা লিঙ্গের অনুপাতে দেশের মধ্যে সবচেয়ে পিছিয়ে হরিয়ানা। বছর দুয়েক আগে রাজ্যে মহিলাদের মধ্যে শিক্ষার হার বাড়ানোর লক্ষ্যে হরিয়ানার পানিপথে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু মোদির সেই প্রকল্পের উদ্দেশ্যেই কার্যত জল ঢেলে দিল হরিয়ানার সরকারের কৃষি সংক্রান্ত পত্রিকায় প্রকাশিত একটি বিজ্ঞাপন। ‘কৃষি সংবাদ’ নামে ওই পত্রিকার মার্চ মাসের সংখ্যায় প্রথম পাতায় রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টারের হাসি মুখের ছবি। আর পিছনের পাতায় ঘোমটায় মুখ ঢাকা এক গ্রাম্য মহিলা ছবি। নিচে লেখা, ’ঘোমটা পরা মহিলারাই হরিয়ানা পরিচয়, রাজ্যের গর্ব।’
এই বিজ্ঞাপন প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে হরিয়ানায়। মনোহরলাল খাট্টার সরকারকে একহাত নিয়েছে বিরোধীরা। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেছেন, এই বিজ্ঞাপন থেকে হরিয়ানা সরকারের পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে। সরকার কী বুঝতে পারছে না, হরিয়ানার মেয়েরা শুধু রাজ্যকেই নয়, দেশকেও গর্বিত করেছে।
বস্তুত, হরিয়ানার বিখ্যাত মহিলা কুস্তিগীর গীতা ফোগাটের জীবনী অবলম্বনেই তৈরি হয়েছে বলিউডের জনপ্রিয় সিনেমা ‘দঙ্গল’। হরিয়ানা সরকারের এই বিজ্ঞাপন নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তিনিও। গীতা বলেন, মেয়েদের ঘোমটায় ঢেকে রাখা, স্কুল যেতে না দেওয়ার মতো পরিবেশ থেকেই টেনে তুলে এনেছেন তাঁর বাবা। তিনি বলেন, ঘোমটার আড়ালে থাকা মহিলারা নন, ঘোমটার আড়াল থেকে যাঁরা বেরিয়ে আসছেন, তাঁরাই হরিয়ানাকে গর্বিত করেছেন।
অন্যদিকে, হরিয়ানার সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী অনিল ভিজের সাফাই, মহিলাদের ঘোমটা থাকা বাধ্যতামূলক নয়, সরকার তা প্রচারও করে না। তবে কিছু কিছু জায়গায় এই প্রথা রয়েছে এবং সেক্ষেত্রে কারও আপত্তি থাকার।-সংবাদ প্রতিদিন
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন