চট্টগ্রামের মুহুরী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
মুহুরী নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এতে করে সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি হুমকির মুখে পড়তে পারে দেশের ৬ষ্ঠ মুহুরী সেচ প্রকল্প। গত কয়েকমাস ধরে দেদারসে বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মিরসরাই উপজেলার পশ্চিম তাজপুর গোবিন্দপুর মৌজায় মুহুরী নদীতে ৫-৬টি বড় কাটিং ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করছে। এরপর বালুগুলো ইঞ্জিন চালিত নৌকা করে শুভপুর, মুহুরী ব্রিজ, লেমুয়াসহ বিভিন্ন স্পটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন সেলস্ সেন্টারে রেখে তা বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে নদীর মিরসরাই অংশের মোবারকঘোনা থেকে মুহুরী প্রজেক্ট পর্যন্ত অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোসৎব চলছে। প্রতিদিন ওইসব এলাকার ৫টি স্পট থেকে লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করছে কয়েকটি প্রভাবশালী মহল। অথচ ওইসব স্থানে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নামে ইজারা দেয়া হয়নি। বালু উত্তোলন কাজে নিয়োজিত একাধিক শ্রমিকের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ইজারা নেয়া হয়েছে কি-না আমরা বলতে পারবো না। আমাদেরকে বালু উত্তোলন করতে নিয়ে আসা হয়েছে। তাই আমরা বালু উত্তোলন করছি। কার মাধ্যমে এসেছেন, কে বালু উত্তোলন করছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে, তারা নাম জানাতে অপারাগতা প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, গত ২৩ নভেম্বর থেকে মুহুরী নদীতে মিরসরাই এলাকায় ইজারা নেয়া ৩টি বালুঘাটে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এরপর থেকে ওইসব ঘাটে মিরসরাইয়ের বৈধ ইজারারদারেরা বালু উত্তোলন বন্ধ রেখেছে। এ সুযোগে সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদরের বিভিন্ন প্রভাবশালী বালু সিন্ডিকেট হয়ে রাত-দিন নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। এছাড়া ওইসব সিন্ডিকেট ধুম মৌজার মোবারকঘোনা, কাটা মোবারকঘোনা, ও মুহুরী প্রজেক্ট ঘেঁেষ বালু উত্তোলন করছে। অথচ মিরসরাই অঞ্চলের বৈধ ইজাদারেরা বালু উত্তোলন করতে পারছেনা।
উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নের পশ্চিম আজমপুর এলাকায় গিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া উপজেলার লোকজন প্রতিদিন ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে। একাধিক সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফাজিলপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন। তাঁরা এভাবে বালু উত্তোলন অব্যহত রাখলে নদীর পাশে অবস্থিত শত শত মৎস্য প্রকল্পের বাঁধ ভেঙ্গে যাবে। এছাড়া হুমকির মুখে পড়বে মুহুরী সেচ প্রকল্প। তাই প্রশাসনের কাছে মুহুরী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করার দাবী জানান।
এদিকে মিরসরাইয়ে ইজারাদারদের বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় একশ্রেণীর বালু ব্যবসায়ী ৩গুন দামে বালু বিক্রি করছে। ৭-৮ টাকা মুল্যের বালু এখন ২৩-২৫ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে মানুষদের।
এ বিষয়ে ৫ নং ওছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক বলেন, ফেনী অংশের একটি সিন্ডিকেট নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। চক্রটি নদীর ১৫০থেকে ২০০ ফুট গভীর থেকে বালু উত্তোলন করায় নদীর পাড় ধসে পড়বে এবং ফসলী জমি নদীতে বিলীন হয়ে যাবে।
এই বিষয়ে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন