চসিকের অভিযানে মেয়রের পিএস এর বিরুদ্ধে ব্যবসায়ির অভিযোগ
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে এক গাড়ি ব্যবসায়ীকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করেছেন বলে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ি সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর কাছে অভিযোগ করেছেন।
গত শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে অভিযোগ দেওয়া হলেও সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয় সোমবার। অভিযোগকারী নিজেই দাবি করেছেন তিনি সিআইপি হিসেবে মনোনীত।
সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম নগরীর পোর্ট কানেকটিং রোডের ওয়ালী কার সেন্টারের স্বত্ত্বাধিকারী ও রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সাবেক নির্বাহী সদস্য বেলায়েত হোসেন সিটি মেয়র বরাবরে মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা আবুল হাশেমের বিরুদ্ধে শারীরিক হেনস্তা করার অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ আরও বলেছেন, মেয়র পিএস ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সিলগালা করারও হুমকি দিয়েছেন।
সিআইপি হিসেবে মনোনীত দাবিদার ওই ব্যবসায়ী বলেন, (২৯ আগস্ট) সাগরিকা থেকে পোর্ট কানেকটিং রোডে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় আমার ভবনের সামনে থাকা র্যাম্পটি তুলে নিয়ে যেতে চায়।
লোকজন জড়ো হওয়া দেখে আমি এগিয়ে গিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাশেমকে সালাম দিয়ে জানতে চাই, র্যাম্পটি যেহেতু আমার জায়গায় এবং জনগণের চলাচলে কোন প্রকার বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে না তাহলে কেন র্যাম্পটি তুলে নেওয়া হচ্ছে?
তিনি কোন প্রকার সদুত্তর না দিলে ওই জায়গা থেকে চলে আসি এবং জানতে চাই যে, আমি কি হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদানকারী নাগরিক হিসেবে কোনো প্রকার সুযোগ পেতে পারি না?’
বেলায়েত অভিযোগ করেন, ‘তিনি (হাশেম) আমাকে পুনরায় ডেকে ভবনটি সিলগালা করে দিবে মামলা দেবেন বলে হুমকি প্রদান করেন। জবাবে আমি তাকে জানাই যে, আপনি যেহেতু সরকারি কর্মকর্তা, আমি বা আমার প্রতিষ্ঠান যদি আইন লঙ্ঘন করে থাকি, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন।’
‘এ কথা বললে সে পুনরায় নিরাপত্তা কর্মীদের নির্দেশ দেন। নিরাপত্তাকর্মীরা আমাকে টেনেহিঁচড়ে ভবনের নিচে ফেলে দেয়। এতে আমার পায়ের গোড়ালি চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়’— অভিযোগে বলেন তিনি।
বেলায়েত বলেন, ‘ওই ঘটনার সম্পূর্ণ সিসিটিভি ফুটেজ আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। গত ৩১ আগস্ট মেয়রের দপ্তরে সশরীরে উপস্থিত হয়ে দেখিয়েছি। আমার সাথে ন্যাক্কারজনকভাবে ঘটে যাওয়া ঘটনার সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার উপযুক্ত বিচার চেয়েছি। অন্যথায় আমার নাগরিক অধিকার ক্ষুন্ন হওয়ার পাশাপাশি শারীরিকভাবে আহত করার কারণে যথাযথ মাধ্যমে আইনের আশ্রয় নেব।’
চসিকের স্ট্রাইকিং ফোর্সের একাধিক কর্মকর্তারা বলেন, ব্যবসায়ি যেভাবে চসিকের ভ্রাম্যমান আদালতকে বাঁধা দিতে চাইলেন, তা অযৌক্তিক। কারণ তিনি সিআইপি হলেও শহরের সুনাগরিক। উনাকে আইন মানতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়রের একান্ত সচিব ও প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোঃ আবুল হাশেম বলেন, উনি যেভাবে ঘটনাটি অতিরঞ্জিত ভাবে উপস্থাপন করছেন সে রকম কোন কিছু ঘটেনি। মূল ঘটনা হলো সে অনুমোদন ছাড়া ফুটপাত দখল করে র্যাম বসিয়েছে শোরুম থেকে গাড়ি নামানোর জন্য।
অভিযানে বিষয়টি নজরে পড়লে খুলে ফেলতে অনুরোধ করি। সে প্রথম দিকে খুলে ফেলবে বলেছেন, পরক্ষণে উনি সিআইপি, উনার কি এটা করার অধিকার নাই বলে বেঁকে বসেন।”
একান্ত সচিব আরও বলেন, ‘তখন আমরা উনাকে বুঝানোর চেষ্টা করি, আইন সবার জন্য সমান। আপনি তো অনুমতি ছাড়া র্যাম বসাতে পারেন না। এসব বলাতে সে একটু বিরূপ আচরণ করেন। পরে স্ট্রাইকিং ফোর্স এর সদস্যরা তাকে শোরুমে যেতে অনুরোধ করলে র্যামে পা ফসকে হয়তো একটু ব্যথা পেয়েছেন। বরং উনি চসিকের ভ্রাম্যমান আদালতে বাঁধা দিতে চেষ্টা করছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন