চার মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় গেল দুই সহস্রাধিক প্রাণ
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত, চার মাসে দেশে এক হাজার ৮৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছে দুই হাজার ১২৩ জন। আহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৫৮ জন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির চার মাসের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এ সময় সংগঠনটি দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে ফিটনেসবিহীন মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন উচ্ছেদ করে মানসম্মত যানবাহনের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করে। এ ছাড়া তারা চালকদের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার পরামর্শও দিয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চলতি বছরে ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত, এই চার মাসে এক হাজার ৮৭১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে নিহত হয়েছেন এক হাজার ৯১৭ জন। আহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ৫৫৮ জন। দেশের ছয়টি বিভাগীয় হাসপাতালের দেওয়া তথ্য অনুসারে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে আরো ২০৬ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, জানুয়ারি মাসে ৪৯৯টি সড়ক দুর্ঘটনায়, এক হাজার ৩৫৩ জন আহত ও ৫১৪ জন নিহত হয়। এ মাসে ১৪০টি বাস, ২০৪টি ট্রাক-লরি ও কাভার্ডভ্যান, নয়টি হিউম্যান হলার, ৪১টি কার ও মাইক্রোবাস, ৫২টি অটোরিকশা, ৯৮টি মোটরসাইকেল, ৩২টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫৩টি নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
এসব দুর্ঘটনার ১৭৭টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৮০টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ও আটটি ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া চাকায় ওড়না পেচিয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এই মাসে গাড়িচাপায় ২০৫ জন পথচারীর মৃত্যু হয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে এসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ৪৩৯টি। এতে এক হাজার ৫২১ জন আহত ও ৪৫৯ জন নিহত হয়। এগুলোর মধ্যে ১১৩টি বাস, ১৮৯টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, নয়টি হিউম্যান হলার, ৬৩টি অটোরিকশা, ৩২টি কার ও মাইক্রোবাস, ৯৩টি মোটরসাইকেল, ২৩টি ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৩৫টি নছিমন করিমন সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
দুর্ঘটনায় ১৫৪টি মুখোমুখি সংঘর্ষ ও ৮৭টি খাদে পড়ে, ছয়টি ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আর গাড়িচাপায় ১৭০ জন পথচারী নিহত হয়।
মার্চ মাসে এসে নিহতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৮৩ জনে। আহত হয়েছেন এক হাজার ৫০৬ জন। এ মাসে ১৩২টি বাস, ২৩৬টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, সাতটি হিউম্যান হলার, ৬১টি অটোরিকশা, ২৭টি কার ও মাইক্রোবাস, ৯০টি মোটরসাইকেল, ১৪টি ব্যাটারিচালিত রিকশা, ২৬টি নছিমন করিমন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
এসব দুর্ঘটনায় ১৫৬টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৮৭টি খাদে পড়ে ও তিনটি ট্রেন-যানবাহনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া গাড়িচাপার ঘটনায় ২২২ জন পথচারী নিহত হন।
এপ্রিল মাসে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে ৪৪২টি। সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন ৪৬১ জন, আহত হন এক হাজার ১৭৮ জন। এই মাসে ১১৪টি বাস, ১৮৪টি ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ছয়টি হিউম্যান হলার, ৬১টি অটোরিকশা, ২৭টি কার ও মাইক্রোবাস, ৮২টি মোটরসাইকেল, ১৪টি ব্যাটারিচালিত রিকশা, ৩৬টি নছিমন-করিমন-ট্রাক্টর সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
এগুলোর মধ্যে ১১৮টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ৮৯টি খাদে পড়ে, একটি বাস-ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া গাড়িচাপায় নিহত হন ২১১ জন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন