চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় মনোযোগ দিতে আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় বিশেষ মনোযোগ দিতে বিশেষ আহ্বান জানিয়ে বৈশ্বিক প্রযুক্তির সাথে তাল মেলাতে নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের গবেষণা সবসময়ই চলবে। কিন্তু একটা দু:খের কথা না বলে পারিনা, সেটা হলো আমাদের কৃষি গবেষণা চলছে, বিজ্ঞানের চলছে। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য খাতে গবেষণা খুবই সীমিত। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় বিশেষ মনোযোগ দিন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ এনএসটি ফেলোশিপ’ ও ‘বিশেষ গবেষনা অনুদান’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
সরকার আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে শ্রমঘন শিল্প গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে চায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী হতাশা ব্যক্ত করে বলেন, ডাক্তারদের একটি মহল এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জনের পর চিকিৎসা চর্চা ও গবেষনা বাদ দিয়ে সরকারি চাকরি অথবা রাজনীতিতে চলে যান। আর এক শ্রেণী আছেন তারা শুধু টাকা কামাতেই ব্যস্ত। একই সাথে সরকারি চাকরি এবং প্রাইভেটে প্র্যাকটিসও করেন। সরকারি চাকরি আর প্রাইভেট প্র্যাকটিসের পর সেখানে কিন্তু আর গবেষণা হয় না।
আমাদের স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষণা খুব দরকার। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের গবেষণা খুবই সীমিত কয়েকজন করেন। তবে তাঁর বার বার বলার ফলে কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে, আরো বেশি দরকার বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পরিবর্তিত বিশ্ববে প্রযুক্তির সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে সরকার প্রধান বলেন, প্রযুক্তির প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে এবং নতুন থিওরি ৪র্থ শিল্প বিপ্লব এসে গেছে। এরফলে আমাদের লোকবল হয়তো কম লাগবে। কিন্তু প্রযুক্তিকে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে এবং সেজন্য আমাদের দক্ষ জনশক্তি দরকার।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আবার আমরা সম্পুর্ণ সেদিকে যেতে চাইনা। আমরা শ্রমঘন শিল্পও করতে চাই। কারণ আমাদের বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও করতে হবে। এই দুটি মিলিয়ে আমাদের দেশকে কিভাবে আমরা এগিয়ে নিতে পারি সেই চিন্তাই সবার মাথার মধ্যে থাকতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের দক্ষ বিজ্ঞানী দরকার। আর সেদিকে লক্ষ্য রেখেই তাঁরা গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছেন। দক্ষ বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ সৃষ্টির লক্ষ্যে দেশে বিদেশে বিজ্ঞান ও প্রযুক্ত গবেষণা এবং অধ্যয়নের জন্য এমএস, এমফিল, পিএইডডি উত্তর প্রোগ্রামে বঙ্গবন্ধু ফেলোশিপ দিচ্ছেন। ২০১০ থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত ৬৮২ জনকে প্রায় ২৬৮ কোটি ৭০ লাখ টাকার ফেলোশিপ দেয়া হয়েছে। এছাড়া এমফিল, পিএইচডি ও পিএইচডি উত্তর পর্যায়ে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ দেয়া হচ্ছে। এই ফেলোশি্েপর আওতায় ২০০৯-১০ থেকে এ পর্যন্ত ২৫ হাজার ৭০১ জন গবেষককে প্রায় ১৫৭ কোটি ৫১ লাখ টাকার বৃত্তি বা অনুদান দেয়া হয়েছে। এটা শুধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে। পাশপাশি প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট থেকেও ফেলোশিপ-বৃত্তি-উপবৃত্তি দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ফেলোশিপের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা উন্নয়ন কাজে উৎসাহ প্রদানে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মাঝে বিশেষ অনুদান দেয়া হচ্ছে। ২০০০৯-১০ থেকে চলতি অর্থবছর পর্যন্ত ৫ হাজার ৫২১টি প্রকল্পের অনুক’লে ১৭৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকা গবেষণা অনুদান দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আশাকরি যারা এই গবেষণা বা ফেলোশিপের জন্য অনুদান পেয়েছেন আপনারা একটু আন্তরিকতার সঙ্গে গবেষণা করবেন। আমি জানতেও চাই আপনারা কি কি উদ্ভাবন করলেন বা তা আমাদের দেশে কতটুকু কাজে লাগবে। আসলে গবেষণার কোন শেষ নেই।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন