চুয়াডাঙ্গায় কন্যাসন্তান হওয়ায় হাসপাতাল থেকে পালালেন মা-বাবা
পূর্বের একসময় অনেক পরিবারে কন্যা সন্তান জন্ম হওয়াটা ভালো চোখে দেখতো না। একজন গৃহবধূর স্বামী না হয় শ্বশুর—শাশুড়ী এমনকি অপছন্দ করতো পরিবারের অন্য সদস্যরাও। শুধু তাই—ই নয় পুত্র সন্তান না হলে গৃহবধূকে তালাক দেয়ার ঘটনাও শোনা যেত।
এদিকে, ইসলাম ধর্মে কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করা মানে পরিবারের জন্য সুবাতাস হয়ে আনে। ভাগ্যের পরিবর্তনের দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখিতও রয়েছে। তারপরও অনেকেই কন্যা সন্তানকে পছন্দ করে না।
সেই আলোকে এবার চুয়াডাঙ্গায় পাপিয়া খাতুন নামের এক গৃহবধূর তিনটি কন্যা সন্তানের পর আবারও একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেছে। এতে কেউ খুশি না হওয়ায় কন্যা সন্তানের পিতা আলমগীর হোসেন, গর্ভারিণী মা পাপিয়া খাতুনসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা হাসপাতালে থাকা বিলকিস বানু নামে এক নারীর কাছে রেখে পালিয়ে যান। তবে স্বামী আলমগীর হোসেন আগে থেকেই স্ত্রী পাপিয়া খাতুনকে বলেছিল পুত্র সন্তান না হলে তাকে তালাক দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারী) সকালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ওই ঘটনা ঘটে। পরে বিকেলে বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়।
বর্তমানে নবজাত কন্যা সন্তানটি হাসপাতালের স্টাফ নার্স মালেকা খাতুনের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পাপিয়া খাতুন নামের এক গৃহবধূর প্রসব বেদনা উঠলে সকাল ৭ টা ৪৩ মিনিটে আলমডাঙ্গা উপজেলার কেষ্টপুর গ্রামের স্বামী আলমগীর হোসেন স্ত্রীকে সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে আসে। ভাগ্যের ফলে সেখানেই কন্যা সন্তান প্রসব করেন গর্ভধারিণী মা পাপিয়া। পরে তাকে ভর্তি করা হয় গাইনী ওয়ার্ডে। কিছুক্ষণ পর কন্যা সন্তানকে আলমডাঙ্গা উপজেলার ছত্রপাড়া গ্রামের বিলকিস বানু নামে এক নারীর কাছে রেখে পালিয়ে যান গর্ভধারিণী মা পিতাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।
পরে খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা—তুজ—জোহরা, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ—পরিচালক সিদ্দিকা সোহেলী রশীদ ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী।
সদর ইউএনও ফাতেমা—তুজ—জোহরা ওই নবজাতকের নামকরণ করেন ‘পুষ্প’।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ওয়াহেদ মাহমুদ রবিন উপরোক্ত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ সেকেন্দার আলী বলেন, ওই দম্পতি হাসপাতালে যে নাম ও ঠিকানা দিয়েছেন তা যাচাই করা হয়েছে। তারা ভুল তথ্য দিয়েছেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ ও ছবি দেখে ওই নারী ও তার স্বজনদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা—তুজ—জোহরা বলেন, নবজাতকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে রয়েছে। প্রচলিত আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন