চুয়াডাঙ্গা যেনো বরফ কারখানা; স্থির হয়ে পড়ছে মানুষ
মাঘ মাসে বাঘ কাঁপে। এমন আলোচিত শীত এ সময়কার জন্য নতুন। সেই বাঘ কাঁপানো শীত-মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে। প্রাকৃতিক আবাহওয়া বদলাতে বদলাতে শীতের দীর্ঘতাও কমে এসেছে।
এদিকে, ইংরেজি মাস হিসাব করলে দেখা যাবে জানুয়ারী মাসে শীত শেষের দিকে থাকে। কিন্তু আবহাওয়া হিসাব করলে দেখা যাবে মাঘ মাসের বাঘ কাঁপানো সেই শীত যেনো আবারও ফিরে এসেছে চুয়াডাঙ্গায়।
পৌষেও শীতের তীব্রতা দেখিয়েছে প্রাকৃতিক শক্তি। মাঘ মাস আসতে এখনও ২ দিন বাকি থাকলেও বাঘ কাঁপানো শীত শুরু হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। বাইরে বের হওয়ার সাহসও হারাচ্ছে জেলার মানুষ। বরফের মতো ঠাÐায় অবশ হয়ে পড়ছে শরীর (মনে হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা যেন বরফ কারখানা)।
সারাদিন রোদের দেখা পায়নি চুয়াডাঙ্গার মানুষ। দিনের বেলায়ও হালকা হালকা কুয়াশা থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে ভোরের আকাশ পর্যন্ত কুয়াশা ঢেকে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা।
খুব বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ার সাহস পাচ্ছে না কেউ। যারা দিনমজুরির কাজ করে থাকে- তাদেরও ঠিকমত বাইরে বের হতে দেখা যাচ্ছে না। পেটের জোগান দিতে নিন্ম শ্রেণীর মানুষগুলো ঠিস লাগা শীতকে সঙ্গী করেই কঠিন সময় পার করছে তারা। বর্তমানে ইজিবাইক, রিক্সাচালক, শ্রমিকরা কাঁপতে কাঁপতে কাজের সন্ধানে বের হলেও মিলছে না কাজ। এতে করে ওইসব শ্রেণীর পেশাজীবীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে সংসার চালাতেও হিমশিম খাচ্ছে তারা।
শীতের প্রভাব গতকাল বৃহস্পতিবার ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলেও আজ (১২ জানুযারী) শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার আকাশজুড়ে শীত বার্তা ঘুর ঘুর করছে এখনও।
সারাদেশের মধ্যে চুয়াডাঙ্গায় সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু একদিনের ব্যবধানে ৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় শীতের প্রভাব বিরাট আকারে বৃদ্ধি পেয়েছে। হাড় কাঁপানো শীত সারাদিনই একইরকম স্থির রয়েছে। অনেক জায়গায় আগুন ধরিয়ে নিবারণ করতে দেখা যাচ্ছে শীত।
রমজান নামের এক রিক্সাচালক বলেন, শীতে প্যাটেল মেরে রিক্সা চালানো যাচ্ছে না। ভাড়াও হচ্ছে না। যা হচ্ছে তা দিনের দিনের খরচ উঠছে না।
নির্মাণ শ্রমিক আব্দুল্লাহ বলেন, প্রচন্ড ঠান্ডা পড়ছে। ঘর থেকে বের হতেই কঠিন। পেটের দায়ে বাইরে বের হলেও কাজ পাওয়া যাচ্ছে না ঠিকমত। খালি হাতেই বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে। এতে করে পরিবার নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ অনুভুত হয়েছে। শুক্রবার (১২ জানুয়ারী) শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সুভাস চন্দ্র সাহা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে কৃষকদের বোরো ধানের বীজতলা ও আলুক্ষেত রক্ষায় বিশেষভাবে সতর্ক করা হয়েছে। ধানের বীজতলা রক্ষায় সকালে চারার ওপর থেকে শিশির সরিয়ে দেয়া, সম্ভব হলে চারা রাতের বেলা ঢেকে দেয়া, বীজতলায় সেচ দিয়ে পরদিন সকালে পানি বের করে দেয়া এবং বীজতলা লাল হলে জিপসাম ও ইউরিয়া সার দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন