জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় আরেক বাংলাদেশির মৃত্যু
আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একজন বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর নাম তাজ রহমান। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তাঁরা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে তাজ রহমানের মৃত্যুর খবর শুনেছেন। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ খবর কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি।
জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর ইন্টারনেটভিত্তিক তৎপরতা নজরদারিতে যুক্ত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইনটেলিজেন্স ১০ মে ‘আবু ইসমাইল’ নামে এক বাঙালি আইএস সদস্যের মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, ইরাকের নিনেভ প্রদেশে ‘আবু ইসমাইল’কে স্মরণ করেছে আইএস। তবে কীভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা জানা যায়নি। সাইট ইনটেলিজেন্স কথিত আবু ইসমাইলের যে ছবি দিয়েছে, সেটি বাংলাদেশের তাজ রহমানের বলে জানাচ্ছেন ঢাকায় তাঁর স্বজনেরা।
পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের একজন কর্মকর্তা বলেন, তাঁরা আবু ইসমাইলের নাম প্রথম জানতে পারেন সিরিয়াফেরত গাজী কামরুস সালামের (সোহান) কাছ থেকে। তিনি আইএসের কথিত রাজধানী রাকায় থাকার সময় তিনজন বাংলাদেশিকে দেখেছিলেন। তাঁদের একজন আবু ইসমাইল, যিনি রাকার একটি হাসপাতালে ফিজিওথেরাপি বিভাগে কাজ করতেন।
ঢাকায় তাজ রহমানের পরিবারের সদস্যরা বলেন, বছর পাঁচেক ধরে পরিবারের সঙ্গে তাজ রহমানের যোগাযোগ নেই। তিনি কবে আইএস-অধ্যুষিত এলাকায় গেছেন, সে খবরও তাঁদের জানা নেই।
একজন নিকটাত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে গত শনিবার বলেন, তাজ সাত ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট হওয়ায় খুব আদরে বড় হন। সব সময় হইচই, হুল্লোড়ে মেতে থাকতেন। ড্রাম বাজাতেন। তিনি উচ্চমাধ্যমিক পাসের পরপরই সাইপ্রাসে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পড়তে যান। বছর দশেক তিনি সেখানে ছিলেন। সেখানে লাটভিয়ার এক নারীর সঙ্গে তাঁর প্রেম হয়। তাঁকে নিয়ে দেশে এসে বিয়ে করেন। এরপর আবার সাইপ্রাস ফিরে যান। সেখান থেকে বছর দেড়েক পর যান ফিনল্যান্ডে। এর মাস ছয়েক পর স্ত্রীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। বছরখানেক পর ফিনল্যান্ডের এক মসজিদের ইমামের মেয়েকে বিয়ে করেন তাজ।
তাঁর ওই আত্মীয় বলেন, দ্বিতীয় বিয়ের কয়েক মাস পর থেকে তাজের আচরণে পরিবর্তন আসতে থাকে। তিনি লম্বা দাড়ি রাখেন। লম্বা পাঞ্জাবি পরা শুরু করেন। দেশে নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে স্কাইপি ও টেলিফোনে কথা বলার সময় ধর্মীয় উপদেশ দিতেন। একপর্যায়ে পরিবারের কাছে বিষয়গুলো বাড়াবাড়ি বলে মনে হয়।
তাজের এই পরিণতির জন্য কে দায়ী, সে সম্পর্কে তাঁর স্বজনেরা সরাসরি কাউকে দোষারোপ করেননি। তবে দ্বিতীয় বিয়ের পর তিনি বদলে যান সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত।
ফিনল্যান্ডপ্রবাসী এক বাংলাদেশি বলেন, তাজ যখন ফিনল্যান্ড ছাড়েন, তখন তাঁর স্ত্রী সন্তানসম্ভবা ছিলেন। তাজসহ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মোট চার ব্যক্তি ফিনল্যান্ড থেকে আইএস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গেছেন বলে তাঁরা শুনেছেন। অবশ্য গত বছরের মার্চে সুইডিশ রেডিওর এক খবরে বলা হয়, অন্তত দুজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্যক্তি ওই দেশ থেকে আইএস-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় গেছেন।-প্রথম আলো
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন