জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসে প্রধানমন্ত্রীর বাণী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ২৮ এপ্রিল ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ উপলক্ষ্যে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন :

“প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ২৮ এপ্রিল ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটি উপলক্ষ্যে ক্রোড়পত্র প্রকাশের উদ্যোগকে আমি স্বাগত জানাই।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ছিল এমন এক শোষণমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা, যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা এবং সুবিচার নিশ্চিত হবে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে জাতির পিতা ১৯৭২ সালের সংবিধানে মানুষের মৌলিক অধিকার এবং সব নাগরিকের আইনের আশ্রয় পাওয়ার সমানাধিকার নিশ্চিত করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর দেশে আইনের শাসন ও মৌলিক মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়। ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে বিএনপি-জামাত জোট সরকার হত্যা, ক্যু, নির্যাতন ও নিপীড়নের রাজত্ব কায়েম করে; সুবিচারের পথ রুদ্ধ করে দেয়। ফলে দেশের জনগণ আইনগত সহায়তা ও অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

আওয়ামী লীগ সরকার আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থ-সামাজিক কারণে বিচারপ্রাপ্তিতে অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে আইনগত সহায়তা প্রদানের জন্য আমরা ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন, ২০০০’ প্রণয়ন করেছি। আর্থিকভাবে অসচ্ছল মানুষ ছাড়াও এসিডদগ্ধ নারী-পুরুষ, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা মহিলা, বিনা বিচারে আটক ব্যক্তি, প্রতিবন্ধী, পাচারকৃত নারী বা শিশুদের সম্পূর্ণ সরকারি অর্থ ব্যয়ে আইনগত সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে এখন শুধু আইনি সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবে সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, বরং মামলাজট কমানোর লক্ষ্যে এসব অফিসকে ‘এডিআর কর্নার’ বা ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্র স্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। দেশের জনগণকে বিনা খরচে সরকারি আইনগত সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যা সারাদেশের আদালতসমূহে মামলাজট হ্রাস করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

আমরা ভয়ভীতি ও বৈষম্য দূর করে নিরাপদ জীবন নিশ্চিত ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি’র অন্যতম লক্ষ্য ‘ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার’ অর্জনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন, দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ‘রূপকল্প ২০৪১’ বাস্তবায়নে সরকারি আইনগত সহায়তা কার্যক্রমের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সকলের সমন্বিত উদ্যোগের উপর এ কার্যক্রমের সফলতা নির্ভর করে। আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করে বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করতে সক্ষম হব।

আমি ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস ২০২৩’ এর সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”