জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়ে উচ্ছ্বসিত নারীরা
ভেদাভেদ ভুলে মিলেমিশে আনন্দ করার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৬ জুন) সকাল সাড়ে ৮টায় পবিত্র ঈদুল ফিতরের এই জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এবার জাতীয় ঈদগাহে ঈদুল ফিতরের প্রধান জামাতে ৮৪ হাজার পুরুষ মুসল্লির পাশাপাশি পাঁচ হাজার নারী মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে জাতীয় ঈদগাহে এসে নামাজ পড়তে পেরে উচ্ছ্বসিত নারীরাও। এছাড়া,বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদেও ঈদের নামাজে অংশ নিয়েছেন নারীরা।খবর বাংলা ট্রিবিউনের।
জাতীয় ঈদগাহে দেশের প্রধান জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, ধর্মমন্ত্রী মতিউর রহমান, মন্ত্রিসভার সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষেরা ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেন।
শিক্ষাভবনের উল্টো পাশে ঈদগাহে নারীদের জন্য আলাদা গেট রাখা হয়। আগে থেকেই ঈদগাহে জায়নামাজ ছাড়া অন্যকিছু না আনার নির্দেশনা ছিল ঢাকা মহানগর পুলিশের। এরপরও যারা বড় ভেনিটি ব্যাগ নিয়ে এসেছেন তাদের পড়তে হয় বিড়ম্বনায়। নামাজে অংশ নিতে বাধ্য হয়েই ব্যাগ ফেলে দিয়ে প্রবেশ করেন ঈদগাহে।
জাতীয় ঈদগাহের জামাতে নারীদের অংশগ্রহণও ছিল ব্যাপকএক বছর বয়সী কন্যা নাঈমাকে নিয়ে লালবাগ থেকে জাতীয় ঈদগাহে এসেছেন জান্নাতুল ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়তে আসতাম বাবার সঙ্গে। এখন মেয়েকে নিয়ে স্বামীর সঙ্গে এসেছি। ঈদগাহে ঈদের নামাজ পড়ার আনন্দটা ভিন্ন রকমের। এটা আসলে ভাষা দিয়ে প্রকাশ করা সম্ভব না।’
প্রথমবারের মতো দুই মেয়ে আর মাকে নিয়ে ঈদের নামাজ পড়তে এসেছেন মরিয়ম আক্তার। তিনি বলেন, ‘মায়ের ইচ্ছে ছিল জাতীয় ঈদগাহে নামাজ পড়ার। মেয়েরাও তাদের নানুর সঙ্গে আসতে চাইলো। তাই তাদের নিয়ে এবারই প্রথম ঈদগাহে আসলাম। এখানে এসে ভীষণ ভালো লাগছে। এত নারী অংশ নেন জানা ছিল না। সবার সঙ্গে নামাজ পড়লাম, মেয়েরাও অনেক খুশি।’
মিরপুর থেকে ভাই আর ভাবির সঙ্গে ঈদগাহে এসেছেন নাজনীন সুলতানা। ঈদগাহে নামাজ শেষে মোবাইলে উচ্ছ্বসিত হয়ে সেলফি তুলছিলেন তিনি। নাজনীন বলেন, ‘মেয়েদের জন্য আমাদের দেশে ঈদের নামাজ পড়ার সুযোগ কম। ঢাকায় ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে এসে সেই সুযোগটা পেলাম।’
ঈদগাহের ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, ‘এবারের ঈদ জামাত নির্বিঘ্ন রাখতে দুই লাখ ৭০ হাজার ২৭৭ দশমিক ৭৫ বর্গফুট বৃষ্টি প্রতিরোধক ত্রিপল লাগানো হয়। এছাড়া ৩১ হাজার ২৬৩ দশমিক ৬১ বর্গফুট সামিয়ানা, ১০০টি ফুলের টব, টিউব বাতি ৭০০টি, বড় ধরনের বৈদ্যুতিক বাতি ১০০টি, স্ট্যান্ড ফ্যান ১০০টি, সিলিং ফ্যান ৭০০টি, ৬০টি জায়নামাজ, প্রবেশ পথে বাঁশ দিয়ে তৈরি ২ হাজার ২৯৬ দশমিক ২ ফুট লাইন, ৫৪০ বর্গফুট ডিজিটাল ব্যানার, ২টি ডিসপ্লে বোর্ড ও ভিআইপিদের জন্য ১০টি এয়ারকুলারও ছিল। ঢাকা ওয়াসা পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করেছে । এছাড়া বসানো হয় বজ্রপাত নিরোধক উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাওয়ার।’
এদিকে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে রয়েছে পাঁচটি ঈদ জামাত। যার মধ্যে প্রথমটি সকাল ৭টা, দ্বিতীয়টি সকাল ৮টা, তৃতীয়টি সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়া সকাল ১০টায় চতুর্থ এবং পঞ্চম ও শেষ জামাত সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররমেও নারীদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা ছিল প্রতিবারের মতো।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন