জীবন্ত মূর্তি হয়ে ৩২ বছর কাটিয়ে দিলেন এই ব্যক্তি
এই গোটা বিশ্বে পেটের তাগিদে অনেক মানুষ অনেক পেশায় নিয়োজিত। এর মধ্যে অনেক মানুষ আছেন যাদের পেশার কথা শুনলে আপনার চোখ চড়ক গাছ হয়ে যাবে। এমনই এক বিচিত্র পেশার মানুষের মধ্যে রয়েছে ভারতেরই একজন। তার নাম আব্দুল আজিজ।
ঘটনার সূত্রপাত ১৯৮৫ সালের শুরুর দিকে। বেকার আব্দুল আজিজ কাজের সন্ধানে ঘুরছেন ভারতের চেন্নাই শহরের পথে পথে। কোথাও কিছু না পেয়ে শেষে দারোয়ানের চাকরি নিলেন ভিজিপি গোল্ডেন বিচ রিসোর্টে। চাকরি পেয়ে সময়টা ভালোই কাটছিল তার। কিন্তু হঠাৎ করেই রিসোর্ট মালিকের মাথায় খেয়াল চাপলো লন্ডনের রানীর বাসভবন বাকিংহাম প্যালেসের গেটের রক্ষীরা যেমন পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকে দর্শনার্থীদের আনন্দ দেওয়ার জন্য তার রিসোর্টের গেটে আব্দুল আজিজেরও সেভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে।
প্রস্তাব শুনে যেন আকাশ ভেঙে পড়লো আজিজের মাথায়। কিন্তু চাকরি চলে যাবার ভয়ে মালিকের মুখের ওপর কিছু বলারও সাহস পাননি তিনি।
অগত্যা তিন মাসের প্রশিক্ষণ নিলেন। সাহসে বুক বেঁধে দাঁড়িয়ে গেলেন ভিজিপি গোল্ডেন বিচ রিসোর্টের মূল দরজায়। সেই থেকে শুরু। টেমস নদীর পানিও বয়ে গেছে অনেক দূর, কেটে গেছে ৩২ বছর।
দীর্ঘ এই সময়ে জীবন্ত মানুষ আব্দুল আজিজ মূর্তির অভিনয় করে চলেছেন। দিনে ছয় ঘণ্টা তাকে অবিকল পাথরের মূর্তির মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। খাওয়া-ঘুম তো দূরের কথা, এ সময়ের মধ্যে তিনি মলমূত্র ত্যাগের মতো প্রাকৃতিক কর্মেও সাড়া দিতে পারেন না। এটাই তার পেশা এবং বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।
আব্দুল আজিজের এই অবিশ্বাস্য দক্ষতা তাকে ‘মূর্তিমানব’র খ্যাতি এনে দিয়েছে। কিন্তু খ্যাতিতে কি আর পেট ভরে? দিনে ছয় ঘণ্টা, মাসে ত্রিশ দিন পাথরের মতো দাঁড়িয়ে থেকে পান মাত্র ১০ হাজার টাকা। তাইতো নিজের ছেলেদের তিনি এই পেশায় আনতে চান না। তবে আয় অল্প হলেও নিজের পেশা নিয়ে খুশি আজিজ এবং দ্রুত এই পেশা থেকে অবসরের কথাও ভাবছেন না তিনি।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন