জয়কে প্রাণনাশের হুমকি, ফেসবুক আইডি বন্ধ

অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়কে হোটসঅ্যাপ, ইমুসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে প্রাণ নাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন। প্রাণ নাশের হুমকি ও ফেসবুক আইডি ডিজেবল হওয়ার প্রেক্ষিতে সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ দমন বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তিনি এ অভিযোগটি দায়ের করেন বলে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের এডিসি নাজমুল ইসলাম।

তিনি বলেন, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়কে হোটসঅ্যাপ, ইমুসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে প্রাণ নাশের হুমকি হয়েছে। এছাড়া ফেসবুক আইডি ডিজেবল হওয়ায় তিনি আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

এডিসি নাজমুল বলেন, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ের হত্যার হুমকি মোবাইলে রেকর্ডে রয়েছে। আমরা তার অভিযোগটি শুনেছি। এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা নিব।

কী কারণে হত্যার হুমকি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কে বা কারা হত্যার হুমকি দিয়েছে বা কী কারণে দিয়েছে তা জানা যায়নি। আমরা বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখছি। জয়ের আইডি উদ্ধার করার চেষ্টা চলছে এবং যারা জীবন নাশের হুমকি দিয়ে ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটি করছে তাদের বিষয়ে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।

প্রাথমিকভাবে হুমকি দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্লট চেয়ে অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয়ের একটি আবেদনপত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দ্বিতীয়বারের মতো ভাইরাল হয়েছে। ২০১৪ সালে করা ওই আবেদনপত্রে জয় পূর্বাচলে একটি প্লট চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে।

এছাড়া বনানী অগ্নিকাণ্ডে পানির পাইপ চেপে ধরে হিরো বনে যায় শিশু নাঈম ইসলামকে নিয়ে তার নেয়া একটি সাক্ষাৎকার সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।

নাঈমের কাজে খুশি হয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী এক বাংলাদেশি তাকে পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় আলোচনায় আসার পর টিভি উপস্থাপক ও অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় একান্ত সাক্ষাৎকার নেন। বনানী ট্র্যাজেডির বীর নাঈমের সঙ্গে তখন তার বাবা-মাও ছিলেন।

নাঈম পুরস্কারের সেই টাকাগুলো নেবে কিনা? আর নিলেও সেই টাকা কিসে খরচ করবে? এমন প্রশ্ন করেন উপস্থাপক জয়।

জবাবে নাঈম জানায়, সেই টাকাগুলো সে এতিমখানার অনাথ শিশুদের জন্য দান করে দিতে চায়। ছেলের এ জবাবে সায় দেন তার মা-বাবাও।

এতিমখানায় কেন টাকা দিতে চায় এমন প্রশ্নের উত্তরে নাঈম বলেন, কিছু বছর আগে খালেদা জিয়া এতিমের টাকা লুট করে খেয়েছেন, তাই এই টাকা তিনি এতিমদের দিতে চান।

তবে শিশু নাঈমকে জয়ের এ ধরনের প্রশ্ন করাটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে এর সমালোচনা করেছেন ফেসবুক ব্যবহাকারীরা।

তারা বলছেন, ওই শিশুটি নিজ থেকে এসব কথা বলেনি। উপস্থাপক জয় শিশু নাঈমকে কথাগুলো শিখিয়ে দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে শিশুটির কথা বলার ধরনেই তা স্পষ্ট।

আরেফিন বিপুল নামে যে আইডি থেকে জয়ের প্লট আবেদনপত্রটি পোস্ট করা হয়েছে; তাতে বলা হয়েছে- ‘শাহরিয়ার নাজিম জয় পূর্বাচলের প্লট মনে হয় এখনো পায় নাই, নাঈমকে শেখানো কথায় এবার তার প্লট কনফার্ম। হায়রে লোভ! জয়ের পূর্বাচলের প্লট পাওয়ার সেই দরখাস্ত কিন্তু কেউ ভুলে নাই।’

কমেন্ট বক্সে আরেফিন বিপুল আরও বলেন, ‘করাইল বস্তির নাঈম নামের ছেলেটা যে ফায়ার ব্রিগেডের ফুটা পাইপ আটকিয়ে রেখেছিল তার ভালো কাজ সামাজিক গণমাধ্যমে প্রশংসা পেয়েছে, নাঈমের বাবা ডাব বিক্রি করেন, নাঈম বাচ্চাটার জনপ্রিয়তা দেখে তার বাবাকে শ্রমিক লীগের নেতা এটা নাঈমকে দিয়ে বলানো হলো। শুধু তাই নয়, কোনো এক আমেরিকা প্রবাসী নাঈমকে পাঁচ হাজার ডলার দিবেন বলছেন, সেই ডলার এখনো আসে নাই, অথচ উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয় নাঈমকে দিয়ে বলালেন খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে দিয়েছেন, আমি (নাঈম) পাঁচ হাজার ডলার গরিবদের দান করে দেব! ’

তিনি আরও বলেন, ‘একটা শিশুর ভালো কাজের ওপর ভর করে তার ইনোসেন্সের সুযোগ নিয়ে তাকে দিয়ে এই কথাগুলো বলিয়ে তার মনে একটা স্থায়ী দাগ ফেলে দেয়া হলো, তাকে ভালো কাজের বিপরীতে স্বার্থ, টাকা সময়ের আগেই শিখিয়ে দেয়া হলো, লাভ হইলো মাফিয়ার।