টার্গেট ষাটোর্ধ্ব ব্যবসায়ী-শিল্পপতি!
মোবাইল নম্বর ও ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে অফিসে দেখা করে বা মোবাইল ফোনে কথা বলে যোগাযোগ ও ঘনিষ্ঠতা শুরু হয়। ফাঁদে ফেলতে মোবাইলে কথোপকথন রেকর্ড করে এক সময় নিজেকে প্রেমিকা দাবি করে প্রতারণা শুরু হয়।
সমাজের উচ্চ পদস্থ ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের অনেকের কাছ থেকেই হাতিয়ে নিয়েছেন লাখ লাখ টাকা। পরিকল্পিতভাবে মানুষকে ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার এমন একটি চক্রকে গ্রেফতার করেছে হাতিরঝিল থানা-পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- চক্রের প্রধান পারভীন আক্তার ওরফে নুপুর (২৮), তার বড় বোন শেফালী বেগম (৪০), মতিঝিলের পারফেক্ট ট্রাভেল এজেন্সির কর্মচারী শামসুদ্দোহা খান ওরফে বাবু (৪০) ও মোবাইল কোম্পানির কাস্টমার সার্ভিস ম্যানেজার রুবেল মাহমুদ অনিক (২৭)।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) হাতিরঝিল থানায় এক ভুক্তভোগীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
৩, ৪ ও ৬ ডিসেম্বর মোহম্মদপুর, নিকেতন, রমনা ও বাড্ডা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পারভীন ও অনিককে তিন দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ৬০ বা তার চেয়ে বেশি বয়সী বিভিন্ন পেশার মানুষকে এরা টার্গেট করে। অন্তত ২০ জনকে এভাবে ব্ল্যাকমেল করার কথা স্বীকার করেছে তারা। এর মধ্যে ডাক্তার, প্রকৌশলী, উচ্চ বেতনধারী বেসরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন। তাদের কাছ থেকে সর্বনিম্ন ৫ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আসামি শামসুদ্দোহা খান বাবু ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করার সুবাদে নিয়মিত বিদেশগামী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহের পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, পদস্থ চাকরিজীবীদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে পারভীন আক্তারকে দিতেন। সমাজকর্মী বা চাকরিপ্রার্থী হয়ে ওই ব্যক্তিদের সঙ্গে সরাসরি বা ফোনে যোগাযোগ করেন। ব্যক্তিগত স্পর্শকাতর কথা মোবাইলে রেকর্ড করে শুরু হয় ব্ল্যাকমেইলিং।
টার্গেটকৃত ব্যক্তির সিম গ্রামীণ ফোনের হলে সার্ভিস সেন্টারের কর্মী চক্রের সদস্য রুবেল মাহমুদ অনিকের কাছ থেকে টাকা দিয়ে সিম রেজিস্ট্রেশনে ব্যবহৃত সেই ব্যক্তির তথ্য সংগ্রহ করেন নুপুর। সেই তথ্যের সূত্র ধরেও শুরু হয় ব্ল্যাকমেইলিং। একপর্যায়ে ফোনো রেকর্ড তুলে ধরে সেই ব্যক্তির পরিবারকে জানানোর হুমকি দেওয়া হয়। দাবি করা হয় পাঁচ থেকে পঞ্চাশ লাখ টাকা পর্যন্ত চাঁদা। টাকা দিতে অস্বীকার করলে আর্বিভাব ঘটে নুপুরের বড় বোন শেফালীর। বোনের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের দায়ে নারী নির্যাতনের মামলার হুমকি দেন তিনি। মান-সম্মানের ভয়ে টাকা দিতে বাধ্য হন ভুক্তভোগীরা।
তেজগাঁও বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, অনেকেই এই চক্রের সদস্যদের টাকা দিতে গিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন। লজ্জায় অনেকেই অভিযোগ করতে চান না। এই চক্রের পৃষ্ঠপোষক ও চক্রের সঙ্গে জড়িত সব সদস্যের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন