টেক ব্যাক বাংলাদেশ, পাকিস্তানই ভালো ছিল’স্লোগানদাতাদের হাতে দেশ নয় : সম্প্রচার মন্ত্রী
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2022/11/IMG_20221115_234006.jpg)
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2025/02/475351977_1256003665483861_2959209934144112011_n.jpg)
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ বলেছেন, ‘যারা ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ, পাকিস্তানই ভালো ছিল’ স্লোগান দেয়, সেই বিএনপির হাতে কখনো দেশ নিরাপদ নয়। তারা দেশকে পেছনে নিয়ে যেতে চায়, পাকিস্তান বানাতে চায়।’
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী এ কথা বলেন। গুরুদাসপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি সম্মেলন উদ্বোধন করেন।
ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে গ্রামগুলোতে শহরের সমস্ত সুযোগ সুবিধা পৌঁছে গেছে। আমরা স্লোগান দেই ‘আমার গ্রাম আমার শহর, ডিজিটাল বাংলাদেশ’। আর বিএনপি স্লোগান দেয় ‘আর নয় ডিজিটাল দেশ, টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ অর্থাৎ বাংলাদেশকে পেছনে পাঠাও। তাদেরকে জিজ্ঞেস করলে বলে- এই স্লোগান আমাদের তারেক ভাইজান দিছে। আর মির্জা ফখরুল সাহেবও বলেন- পাকিস্তানই ভালো ছিল।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে যে উন্নয়ন, অগ্রগতি, ডিজিটাল বাংলাদেশ, বিএনপি এখান থেকে বাংলাদেশকে কয়েক দশক পেছনে নিয়ে যেতে চায়। যে পাকিস্তান বাংলাদেশের দিকে তাকিয়ে আজ দীর্ঘশ্বাস ফেলে, তারা দেশটাকে সেই পাকিস্তান বানাতে চায়। যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে না, পাকিস্তানই ভালো ছিল বলে, তাদের হাতে আমরা দেশ তুলে দিতে পারি না। যারা বাংলা ভাইয়ের জন্ম দিয়েছিল, যারা নাটোরে মমতাজ ভাইকে হত্যা করেছিল, আবার সেই জনপদে আমরা ফেরত যেতে পারি না।’
মির্জা ফখরুল সাহেব ক’দিন আগে তাদের মনের কথা বলেছেন উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তিনি বলেছেন যে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে তারা না কি তারেক জিয়ার নেতৃত্বে জাতীয় সরকার গঠন করবে। অর্থাৎ সব ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে চাঁদা আর টোল তোলার হাওয়া ভবনের তারেক রহমানকে না কি নেতৃত্বে আনবে। তার মানে আগে পাঁচশ’ জায়গায় বোমা ফেটেছে, এবার পাঁচ হাজার জায়গায় বোমা ফুটবে, আবার বাংলা ভাই হবে, মানুষকে টাঙ্গিয়ে রেখে মারতে মারতে হত্যা করবে, আবার ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা হবে। তারেক জিয়াকে আনলে এগুলো হবে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘তারেক জিয়া মানুষের সামনে একটি আতঙ্কের প্রতীক, গ্রেনেড হামলার প্রতীক, বোমা হামলার প্রতীক, বাংলা ভাইয়ের প্রতীক, তাকে দিয়ে তারা সরকার গঠন করতে চায়। এক বছর পর আবার নির্বাচন হবে। যদি আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় না আসে তাহলে দুলু সাহেব না কি বলে গেছেন- সবার পিঠের চামড়া তুলে ফেলবে। অর্থাৎ তারা যদি ক্ষমতায় আসে জনগণের পিঠের চামড়া তুলে ফেলবে। সুতরাং এ দেশের ক্ষমতা তাদের হাতে তুলে দেয়া যায় না।’
সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা টানা ১৪ বছর ধরে ক্ষমতায় আছি। পৃথিবীর কোনো সরকার শতকরা একশ’ ভাগ নির্ভুল কাজ করতে পারেনি, পারবে না। আমাদেরও ভুলত্রুটি থাকতে পারে, সেগুলো সংশোধন করে ভবিষ্যতে আরো সুন্দরভাবে স্রষ্টার কৃপায় জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হবে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমানের সভাপতিত্বে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ শরিফুল ইসলাম রমজান প্রধান বক্তা, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন সম্মানিত অতিথি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, মোঃ শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ড. রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে অ্যাডভোকেট আনিছুর রহমানকে সভাপতি এবং আব্দুল মতিনকে সাধারণ সম্পাদক করে উপজেলা আওয়ামী লীগের নতুন কার্যনির্বাহী পরিষদ গঠিত হয়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে গণমানুষের দল, এদেশের খেটে খাওয়া মেহনতি মানুষের দল হিসেবে বর্ণনা করে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘নির্যাতিত নিপীড়িত মানুষের কথা বলার জন্যই আওয়ামী লীগের জন্ম ১৯৪৯ সালে। যখন রাজনীতি ছিল বড়লোকদের হাতে, রাজনীতি ছিল ড্রয়িং রুমে বন্দি, রাজনীতি করতো জমিদারেরা, সেই রাজনীতিকে গণমানুষের কাতারে আনার জন্যই আওয়ামী লীগের জন্ম হয়েছে। এদেশের সমস্ত অর্জনের সাথে আওয়ামী লীগের নাম জড়িয়ে আছে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা, মেঘনা, যমুনা’, ‘তুমি কে আমি কে- বাঙালি বাঙালি’ স্লোগানের মাধ্যমে হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালিকে উজ্জীবিত করেছিলেন। তার ডাকে বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়ে এ দেশের স্বাধীনতা এনেছে।’
ড. হাছান স্মরণ করিয়ে দেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয় তখন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯ দশমিক ৫৪ শতাংশ। আমরা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি, কিন্তু ৯ শতাংশের বেশি অর্জন করতে পারি নাই। ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশে ১০ হাজার টন অতিরিক্ত খাদ্যশস্য উৎপাদন হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু যখন দেশ পুনর্গঠন করে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন আমাদের স্বাধীনতাকে হত্যার জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু তার স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়ন করে যেতে পারেননি। আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে বহুদূর এগিয়ে গেছে, পৃথিবীর সামনে একটি মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
![](https://ournewsbd.net/wp-content/uploads/2024/12/469719549_122234398946008134_2936380767280646127_n.jpg)
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন