ঠাকুরগাঁওয়ের ভূল্লীতে কৃষি ক্লাবের জমি জোর পূর্বক ভাবে দখলের অভিযোগ
ঠাকুরগাঁওয়ে ভূল্লীতে যুব কৃষি ক্লাবের জমি জোরপূর্বক ভাবে দখল করে ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় টিন ব্যবসায়ী আবুল কালাম নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।
হঠাৎ করে প্রাচীণ এই কৃষি ক্লাবের জমি দখলের ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। এতে করে যে কোন সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের কচুবাড়ী জোতপাড়া গ্রামে অবস্থিত প্রাচীণ যুব কৃষি ক্লাবের জায়গার গাছপালা কেটে ঘর নির্মাণ করতে যান টিন ব্যবসায়ী আবুল কালাম। এ সময় স্থানীয়রা অবৈধভাবে কাজ নির্মাণের বাঁধা প্রদান করেন। কিন্তু কোন বাঁধা ও আইন তোয়াক্কা না করে ঘর নির্মাণের কাজ করতে থাকে। এক পর্যায়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুনুর রশিদ ভূল্লী থানায় অভিযোগ দিলে প্রশাসন এসে কাজ বন্ধ করতে বলেন।
কিন্তু প্রশাসনের কথাও তোয়াক্কা না করে বুধবার পুনরায় কাজ শুরু করেন। এ সময় স্থানীয়দের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা যায়।
জানা যায়, ১৯৮৪ সালে স্থানীয় বাসিন্দা মৃত. ফয়জুর রহমান কচুবাড়ী মৌজার ১১১৮ ও ১১৬৪ খতিয়ানের সাড়ে সাত শতক এবং রেজিয়া বেগম নামে এক মহিলা একই খতিয়ানের পৈত্তিক সম্পতির অংশ ছয় শতক জমি এলাকায় উন্নয়নে ও যুব কৃষি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করার জন্য দান করেন।
পরিবর্তী সময়ে সেখানে কৃষি ক্লাব গঠন হয় এবং সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রজেক্ট, কৃষি সেবা, খেলাধুলা, সামাজিক অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম হয়ে আসতে ছিলো। কয়েক বছর থেকে ক্লাবের কোন কার্যক্রম না থাকায় পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। ক্লাবটি দেখভালের জন্য খতিবদ্দীন নামে এক ব্যক্তিকে বসবাসের জন্য রাখা হয়।
হঠাৎ করে টিন ব্যবসায়ী জমির মালিকানা দাবি করে ঘর নির্মাণ করেন। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় হাফিজুল নামে এক কৃষক বলেন, আমরা এই কৃষি ক্লাবে অনেক খেলাধুলা করেছি। এখানে আগে আমরা কৃষি বিষয়ে অনেক সেবা পেতাম। বিভিন্ন অনুষ্ঠান হতো এই ক্লাবে। এই জমি ক্লাবের জমি।
আমরা সুষ্ঠু তদন্ত করে ক্লাবের জমি উদ্ধার চাই এবং এটার সাথে যে সন্ত্রাসীরা জড়িত তাদের বিচার চাই।
মোখলেছুর রহমান নামে এক স্কুল শিক্ষক বলেন, আমাদের বাব দাদারা এই ক্লাবে কৃষি সেবা নিতো। ক্লাবে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা, সামাজিক অনুষ্ঠান হতো। কৃষি অফিসার এসে এখানে কৃষি পরামর্শ দিতেন। এই জমি ক্লাবের জমি সকল কাগজ পত্র আছে। যারা রাতারাতি ভুয়া কাগজ পত্র বানিয়ে মালিক দাবি করতেছে তাদের বিচার চাই এবং এই ক্লাবের পূর্ণপ্রতিষ্ঠার জন্য প্রশাসনের কাছে সহযোগিতা চাই।
শাহজাহান নামে এক যুবক বলেব, ক্লাবের জমির দলিল থাকার পরও আমরা প্রশাসনের কোন
সহযোগীতা পাচ্ছি না। কালাম জোরপূর্বক ভাবে ঘর নির্মাণ করতেছে। সে টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করতেছে। প্রাচীণ এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটি রক্ষার জন্য আমরা প্রশাসনের সকলের কাছে সহযোগিতা চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আবুল কালাম জানান, আমার কাছে জমির কাগজ পত্র আছে তাই আমার ক্রয়কৃত জমিতে ঘর করতেছি। এখানে কারও কিছু করার নেই।
এ বিষয়ে ৬ নং আউলিয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান জানান, প্রাচীণ যুব কৃষি ক্লাবের জমি কেউ অবৈধভাবে দখল করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভূমি কমিশনার আলাউদ্দীন জানান, কোন ক্লাব বা ব্যক্তির জমি জোরপূর্বক বেআইনি ভাবে কেউ দখল করতে পারবে না। যদি আমরা কোন অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন