ঠাকুরগাঁওয়ে রাত হলেই বসে অশ্লীল নাচের আসর

প্রতি বছরের মতো এবারও ইতিহাস প্রসিদ্ধ নেকমরদ ঔরষ মেলার আয়োজন করা হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলে। মেলায় সার্কাস ও সামাজিক যাত্রাপালার অনুমতি থাকলেও রাতে বসানো হচ্ছে অশ্লীল নৃত্যের আসর। রাত গভীর হওয়ার সাথে সাথেই চলছে নগ্ন নাচ।

এসব অশ্লীল নগ্ন নাচ দেখতে চড়া দামে টিকিট কেটে নাচের আসরে ভীড় জমাচ্ছে শিক্ষার্থী সহ উঠতি বয়সের যুবকরা। আর এ মেলার সভাপতি হচ্ছেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার রকিবুল হাসান নিজেই। এলাকাবাসীর দাবি তার মদদেই চলছে অশ্লীল নাচের আসর। মেলার নামে এমন আয়োজনের জন্য সচেতন মানুষের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, কাতিহার-নেকমরদ সড়কের পাশে আবাদি জমিতে ইতিহাস প্রসিদ্ধ নেকমরদ ঔরষ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ হয় এমন জমিতে এবার আবাদ বন্ধ রেখে মালিকদের সঙ্গে কথিত চুক্তি করে এ মেলা বসিয়েছে আয়োজকরা। মেলা প্রাঙ্গণে গড়ে তোলা হয়েছে দুই শতাধিক দোকানপাট।

বিভিন্ন প্যান্ডেলে চলছে সার্কাস, মৃত্যু ঝুঁকি মোটরসাইকেল ও কার খেলা। অদূরেই তৈরি করা হয়েছে রাজদূত অপেরার যাত্রা প্যান্ডেল। যাত্রার আকর্ষণ বাড়াতে প্যান্ডেলের মূল ফটকে সাঁটানো হয়েছে সুন্দরী নারীদের ছবি সম্বলিত ব্যানার। ছবি দেখেই হুমড়ি খেয়ে পড়ছে উঠতি বয়সী যুবকরা।

প্রথম ক্লাস ১২শ, দ্বিতীয় ক্লাস ৮শ এবং তৃতীয় ক্লাসে ৫শ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে যাত্রা প্যান্ডেলে প্রবেশ করছে বিভিন্ন বয়সী মানুষ। রাত ১১টায় শুরু হয় যাত্রাপালার নামে অসামাজিক নাচ। হিন্দি গানের তালে তালে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করে মঞ্চ মাতাতে শুরু করে একদল সুন্দরী রমণী। এতেই খুশি হয়ে তাদের গায়ের উপর কারি কারি টাকা ছিটাচ্ছে আকর্ষিত দর্শকরা।

গত কয়েকদিন ধরে চলছে এসব অসামাজিক কার্যকলাপ। এতে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে উঠতি বয়সের যুবকদের মাঝে। অসামাজিক নাচ গান দেখার টাকা জোগাড় করতে তারা জড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের অপরাধে। এতে সচেতন মানুষের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। উপজেলা নিবার্হী অফিসার রকিবুল হাসান নিজেই মেলার সভাপতি হওয়ায় এলাকাবাসী এ সব অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধ করতে কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না।

যাত্রা দেখতে আসা রফিকুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি জানান, ভেবেছিলাম গ্রামীণ যাত্রা হবে। কিন্তু ভেতরের চিত্র আলাদা। যাত্রার নামে অসামাজিক অর্ধনগ্ন নাচ প্রদর্শন করা হচ্ছে। সভ্য সমাজে অবাধে এ ধরনের কর্মকান্ড চালানো হচ্ছে। এসব অনৈতিক কাজ বন্ধে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

মাহাবুব আলম নামে আরেক ব্যক্তি জানান, উপজেলা নিবার্হী অফিসার মেলার সভাপতি। তার মদদেই এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে মেলার আয়োজকরা। ঔরষ মেলার নামে যা হচ্ছে এটা কাম্য নয়।

আবু তারেক বাঁধন নামে এক যুবক জানান, কয়েকদিন আগে ডাঙ্গীপাড়া এলাকার একজন চাকরীজীবি যাত্রা দেখতে গিয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকা উড়িয়েছে। এ ভাবেই টাকা লুটে নিয়ে যাচ্ছে তারা।

এ বিষয়ে উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও নেকমরদ ঔরষ মেলার সভাপতি রকিবুল হাসান জানান, অশ্লীলতার বিষয়ে আমার জানা নাই। আপনি নিউজ করে পাঠাই দেন। ব্যবস্থা নিবো।