ঢাকা-১৭ আসনে ভোট পড়েছে সাড়ে ১১ শতাংশ, নৌকার আরাফাত নির্বাচিত
ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনের উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। নৌকা প্রতীকে তিনি ২৮ হাজার ৮১৬ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম একতারা প্রতীকে পেয়েছেন ৫ হাজার ৬০৯ ভোট।
সোমবার (১৭ জুলাই) রাতে ১২৪টি কেন্দ্রের এ ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান। নির্বাচনে ১১ দশমিক ৫১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ঢাকা-১৭ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ৬২৫ ও নারী ভোটার ১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৮০ জন। ১২৪টি কেন্দ্রের ৬০৫টি ভোটকক্ষে সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ শেষে শুরু হয় গণনা। সব কেন্দ্রে ভোট হয় ব্যালট পেপারে।
বিকেল ৫টার পর থেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন কেন্দ্রের ফলাফল আসতে থাকে। প্রথমে ৫০টি এবং দ্বিতীয় ধাপে ১০৮ কেন্দ্রের প্রাপ্ত ফলাফল তুলে ধরেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
এর আগে সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরুর পর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। ভোটগ্রহণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। ধারণা ছিল, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। কিন্তু দুপুর গড়ালেও বিভিন্ন কেন্দ্র ছিল অনেকটাই ফাঁকা। এত কম ভোটার উপস্থিতি নিয়ে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও হতাশা ব্যক্ত করেন।
তবে প্রার্থীদের কেউ কেউ জানান, স্বল্প মেয়াদের জন্য এ উপ-নির্বাচন হওয়ায় ভোটারদের আগ্রহ কম। তাই অনেকে ভোটকেন্দ্রে আসেননি। অন্যদিকে বিএনপি এ উপ-নির্বাচনে অংশ নেয়নি। ফলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সামনে প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী ছিল না।
ভোটগ্রহণ শেষে বিকেলে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর সাংবাদিকদের জানান, ঢাকা-১৭ আসনে ঠিক কত শতাংশ ভোট পড়েছে সে তথ্য আমরা পাইনি। তবে খুবই কম ভোট পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ হতে পারে, সর্বোচ্চ ১৪ থেকে ১৫ শতাংশ ভোট পড়তে পারে।
ঢাকা-১৭ আসনের উপ-নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন আটজন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীয়ত মোহম্মদ আলী আরাফাত, জাতীয় পার্টির সিকদার আনিসুর রহমান, জাকের পার্টির কাজী মো. রাশিদুল হাসান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. রেজাউল ইসলাম স্বপন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. আকবর হোসেন দলীয় মনোনয়নে নির্বাচনে অংশ নেন। অন্যদিকে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম এবং তারিকুল ইসলাম স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন।
এরমধ্যে ভোটের প্রচারণায় মোহম্মদ আলী আরাফাত, হিরো আলম ও সিকদার আনিসুর রহমান সবচেয়ে বেশি তৎপর ছিলেন।
এদিকে উপ-নির্বাচনে নির্বাচনী পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম জানিয়েছেন, এ সরকারের অধীনে তিনি আর কোনো নির্বাচন করবেন না। তিনি বলেন, ভোটের এরকম পরিবেশ হলে, প্রার্থীদের ওপর হামলা হলে, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো দরকার নেই।
সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে রাজধানীর বনানী বিদ্যানিকেতন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে গেলে হামলার শিকার হন হিরো আলম। এরপর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে সাংবাদিকদের ভোট নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেন তিনি।
এ হামলার ঘটনায় দুজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। তাদের একজন নিজেকে স্থানীয় শ্রমিক লীগ নেতা বলে দাবি করেছেন।
হিরো আলমের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজের ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি এ হামলার নিন্দা জানান।
গত ১৫ মে চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক) মারা যাওয়ায় ঢাকা-১৭ আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন