তিন আসন থেকে দাঁড়াবেন খালেদা জিয়া
অতীতের ‘ভুল’ থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেয়ার কথাই ভাবছে। খোদ দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে কোনো আইনি ঝামেলা না থাকলে, তিনটি আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন তিনি। এই তিনটি সম্ভাব্য আসন হচ্ছে সিলেট, ফেনী ও বগুড়া।
গত মঙ্গলবার গুলশান কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়টি আসনগুলোতে আগাম জানিয়ে দেয়ার চিন্তা করা হচ্ছে। যাতে করে সংশ্লিষ্টরা প্রচারের প্রস্তুতি নিতে পারেন।
ইতিমধ্যে দলের হাইকমান্ডের পক্ষ থেকে আন্দোলন এবং নির্বাচনের প্রস্তুতির বার্তা নিয়ে সারাদেশে কর্মিসভা প্রায় শেষ করেছেন দলের ৫১টি সাংগঠনিক টিম। ওই ৫১টি টিমের প্রতিবেদন প্রস্তুত হচ্ছে এখন। ওই প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনার পর ৩০০ আসনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা করা হবে বলে জানা গেছে।
দলের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। তবে এজন্য একটি গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ থাকতে হবে। নির্বাচনের মাঠ সমতল হতে হবে। এক্ষেত্রে সরকার ছাড় না দিলে বিএনপি কি করবে, সে পরিকল্পনাও তৈরি আছে।
দলটির সিনিয়র নেতারা মনে করছেন, নিজেদের লোকজনদের দিয়ে জরিপ করে তারা ইতোমধ্যেই ধারণা পেয়েছেন। জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী যাই-ই হোক, সারাদেশের মানুষ বিএনপিকে ভোট দিতে চায়। তবে তাদের ভোটগুলো তুলে আনতে হবে।
দলীয় একটি সূত্র জানায়, আসনভিত্তিক প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিএনপির নিজস্ব কৌশল আছে। এক্ষেত্রে জরিপ করা হয়েছে। দলের একটি টিম কাজ করছে। তবে কী ধরনের টিম কাজ করছে, এ নিয়ে কোনও তথ্য সংশ্লিষ্ট সূত্রটি জানাতে পারেনি। যদিও দলটির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য এ প্রতিবেদককে জানান, ইতোমধ্যে জরিপ পরিচালিত হয়েছে। জরিপের ফল নিয়ে তারা আশাবাদী। নিজেদের ঘরানার প্রতিষ্ঠানকে দিয়েই জরিপটি এ বছরেই করা হয়েছে বলে জানান এই সদস্য।
জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, স্থায়ী কমিটিই দলের পার্লামেন্টারি বোর্ডের দায়িত্ব পালন করে। এ কারণে সব তথ্য এবং জনমত হাতে এলে স্থায়ী কমিটিই সিদ্ধান্ত নেবে কারা মনোনয়ন পাবেন। একই প্রসঙ্গে বিএনপির অন্যতম ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই করা হয় কয়েকটি কৌশল অবলম্বন করে। এক্ষেত্রে তৃণমূলের প্রস্তাব, অভিমত, দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বিবেচনা করা হয়।
এদিকে দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবে। বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন হবে না। সারাদেশেই আমাদের নির্বাচনী প্রস্তুতি রয়েছে। তিনি বলেন, তিন’শ আসনের প্রার্থী তালিকার বেশিরভাগই চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার খসড়া তালিকায় আছেন। বড় জোর ২০ থেকে ২৫ আসনের প্রার্থী তালিকা বাকি থাকতে পারে। নির্বাচনের আগেই এই তালিকা চূড়ান্ত করা হবে। এ মুহূর্তে নির্বাচন হলে বিএনপি ম্যাডামের সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারবে। কাকে, কোথায় মনোনয়ন দেবেন, সে বিষয়ে খালেদা জিয়ার স্পষ্ট ধারণা আছে।
এছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা প্রসঙ্গক্রমে বলেন, বিগত ১১ বছরে দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা, গুম হওয়া নেতাকর্মীদের পরিবারের সঙ্গে আচরণ, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ইত্যাদি কার্যক্রমও বিবেচনায় নেবেন দলীয় হাইকমান্ড।
প্রসঙ্গত, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, গতবার একতরফা জাতীয় নির্বাচন করতে পারলেও এবার বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন সহজ হবে না। তিনি বলেন, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ আসনে বিএনপির ৯০০ প্রার্থীর খসড়া তালিকা প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় বিএনপির তিন-চারজন করে প্রার্থী আছেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন