দিনাজপুরে করোনা টিকার স্বেচ্ছাসেবীদের প্রায় ৯ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ
দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দরে করোনা টিকাদানে সংশ্লিষ্ট ১৫ স্বেচ্ছাসেবীর (এমএইচভি) স্বাক্ষর জাল করে ৮ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন করে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী ১৫ জন স্বেচ্ছাসেবী ভাতা চাইতে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তাদের চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেয়।
স্বেচ্ছাসেবীদের বকেয়া এসব ভাতা ও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ ও একইসঙ্গে বকেয়া ভাতা না পেলে কর্মবিরতিসহ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৭ ফেব্ররয়ারি থেকে কাজ করছেন ১৫ জন স্বেচ্ছাসেবী। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত তাদের প্রত্যেকের দিন হাজিরা ৩৫০ টাকা। কিন্তু এর আগে ভ্যাট-ট্যাক্স কেটে ১৬০ টাকা করে দিন হাজিরা নিতে বাধ্য করা হয়। এরই মধ্যে গত ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে তাদের নামে বরাদ্দ ৭ মাসের ৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা উত্তোলন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কর্মরত স্বেচ্ছাসেবীদের জানায় যে তাদের নামে কোনও টাকা আসেনি।
এরইমধ্যে স্বেচ্ছাসেবীরা জানতে পারে তাদের নামে বরাদ্দ অর্থ তাদের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে গত ৩০ জুন উত্তোলন করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানভীর হাসনাত রবিনের কাছে গেলে তিনি বলেন, ‘ওই ৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা আমার নিজ নামে পাঠিয়েছে কর্তৃপক্ষ। আমার নামে বরাদ্দ টাকা আমি যা খুশি তাই করবো এখানে তোমাদের বলার কিছু নাই। টাকা চাইলে এমএইচভি পদে থাকা চাকরি হারাতে হবে বলেও হুমকি দেন।’ ভাতা চাওয়ায় গত ২২ আগস্ট উপজেলার রাজাপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে এমএইচভি পদে কর্মরত ভরতচন্দ্র অধিকারীকে কারণ দর্শানোর চিঠি দেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তানভির হাসনাত রবিন।
স্বেচ্ছাসেবক রাকিবুল ইসলাম বলেন, আমরা যারা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে করোনার সময়ে কাজ করেছি তাদেরকে সম্মানি ভাতা দেওয়া হয়। আমরা কাজ করছি মোট ১৫ মাস। এরমধ্যে আমরা প্রথমে ৭২ দিনের টাকা পেয়েছি। পরে আমাদের দেওয়া হয়েছে ১৫ দিনের টাকা। কিন্তু বাকি টাকা আমাদের এখনও দেওয়া হয়নি।
স্বেচ্ছাসেবক মনিরা আক্তার বলেন, আমরা করোনা শুরুর দিক থেকে এই কাজ করে আসছি। আমাদের সম্পূর্ণ কাজের ১৫ মাসের টাকা আমরা এখনও পাইনি। এখন আমরা প্রাপ্য সম্মানি চাইতে গেলে হেনস্থা হচ্ছি। আমাদের একটাই দাবি পাওনা টাকা বুঝিয়ে দিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানভির হাসনাত রবিন আওয়ার নিউজের দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি নয়ন কে বলেন, যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে সেগুলো ভিত্তিহীন ও তাদের দাবিগুলো অযৌক্তিক। তাদের নামে অর্থ তোলা হয়েছে কিন্তু এখনও বিতরণ শুরু হয়নি। যে ৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা এসেছে তা প্রায় ৩০০ জন স্বেচ্ছাসেবীর নামে।
দিনাজপুরের সিভিল সার্জন ডা. এএইচএম বোরহান-উল-ইসলাম সিদ্দিকী বলেন, আমাকে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি সেই অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা করছি। এই ঘটনায় কর্মকর্তা দোষী হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন