দিনাজপুর জেলা পরিষদে উপ—সহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্ব প্রদান নিয়ে চেয়ারম্যান কতৃক সরকারী আদেশ ও রষ্ট্রীয় প্রজ্ঞাপনকে অবজ্ঞা

দিনাজপুর জেলা পরিষদে সার্ভেয়ার উপ—সহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্ব প্রদান করা নিয়ে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সার্ভেয়ার প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন এমবিএ কে দায়িত্ব দিলেও চেয়ারম্যান দ্বিমত পোষন করে তাতে অনুমোদন প্রদান করছেনা।

অপরদিকে উপ—সহকারী প্রকৌশলীর সরকারি সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করার পরও দায়িত্ব পালন করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন।

দিনাজপুর জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন বলেন, আমি সার্ভেয়ার পদে ২০১০ সালে ৫ আগষ্ট সার্ভেয়ার পদে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদে যোগদান করেন। নিযোগ বিধির গেজেট এস আর ও নং ২— আইন/২০০২/জেপশা/বিধি—১/২০০৬ এবং জেলা পরিষদ আইন ২০০০(২০০০সনের১৯ নং আইন)এর ধারা ৭৩ প্রদও ক্ষমতা বলে অনুচ্ছেদ (ফ)অনুযায়ী সার্ভেয়ার পদটি প্রকৌশল পদ এবং আমি প্রকৌশল হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগ (জেলা পরিষদ অধিশাখা) কতৃর্ক অফিস আদেশে (৪৬.০৪২.০৩২.০২.০০.১৪৪.২০১১—৩০৪৪.তারিখ০১.০৭.২০১৩খ্রিঃ) স্বারক মূলে আমাকে প্রকৌশলী/উপ সহকারি প্রকৌশলী হিসেবে পালনের নির্দেশ দিয়েছেন।সেই চিঠির আলোকে কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদে ১০ বছর প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।পরবর্তীতে স্থানীয় সরকার বিভাগ (জেলা পরিষদ শাখা ) এক স্বারকে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সাটিফিকেটধারী সার্ভেয়ারগণ প্রকৌশলী/উপ সহকারী প্রকৌশলী হিসাবে দায়িত্ব পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়াও স্থানী সরকার কতৃর্ক জারিকৃত পরিপত্রে সার্ভেয়ারকে প্রকৌশলী হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং উন্নয়ন মূলক কাজের গুনগতমান নিয়ন্ত্রনণ ও পরীবিক্ষনসহ যাবতীয় কার্যক্রম প্রতিপালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে সরকারের সকল নির্দেশনা অনুসরন করে দায়িত্বভার অর্পন ও অনুমতি প্রদান করেছেন এবং মহামান্য হাইকোর্ট কর্তৃক ( রীট নম্বর—২৮৯৪/২০২১ ) রায়ে আমাকে পেশাগত ও দক্ষ প্রকৌশলী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন । কিন্তু দিনাজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিলাওয়ার হোসেন দ্বিমত পোষন করেছেন যা অনুভিপ্রেত এবং সরকারী আদেশ ও রষ্ট্রীয় প্রজ্ঞাপনকে অবজ্ঞা পাশাপশি আদালত অবমাননার সামিল ।

সার্ভেয়ার প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন আরও জানান, তিনি কিশোরগঞ্জ ও বরিশালে উপসহকারী প্রকৌশলীর দায়িত্ব পালন করেছি। কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদ আমাকে ৭০ লক্ষ টাকার কাজ দেখা শোনা করার অভিজ্ঞতার সনদপত্র দিয়েছে।

কিন্তু চলতি সালের ৪ ফেব্রুয়ারী দিনাজপুর জেলা পরিষদে বদলী হয়ে আসার পর থেকে অদ্যাবদি উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব দিচ্ছেন না। তিনি বলছেন সার্ভেয়ারের কাজ জেলা পরিষদের জমি জমা দেখা শোনা করা। কাজেই তাকে উপসহকারী পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়ার কোন সুযোগ নেই।

এ ব্যাপারে সার্ভেয়ার প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন জানান, জেলা পরিষদের জমি কথায় কি অবস্থায় আছে তা দেখার জন্য কোর্স করা সুপারভাইজার ও সাবওভারশিয়ার রয়েছেন। তারা জমি জায়গা দেখা শোনা করবেন। সার্ভেয়ার প্রকৌশলী হিসেবে আমার কাজ হচ্ছে উন্নয়ন মূলক কাজের গুনগতমান নিয়ন্ত্রনণ ও পরীবিক্ষনসহ যাবতীয় কার্যক্রমের রিপোর্ট দেয়া।

কিন্তু গত ১৬ মে দিনাজপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জয়নুল আবেদীন প্রেষণে থাকা উপসহকারী প্রকৌশলী মোঃ মানিক মিয়াকে প্রেষণ পদ হতে প্রত্যাহার করে আমাকে দায়িত্ব দেয়ার জন্য লিখিত নির্দেশনা দিয়েছেন। তারপরও চেয়ারম্যান দিলাওয়ার হোসেন দ্বিমত পোষন করে ফাইলে স্বাক্ষর করছেন না।

জানতে চাইলে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ জয়নুল আবেদীন বলেন, আমি সরকারি চিঠিপত্র দেখে ও বুঝে সার্ভেয়ার প্রকৌশলী মোঃ আল আমিনকে উপ সহকারী হিসেবে দায়িত্ব দেয়ার জন্য চিঠি দিয়েছি। বাঁকিটা চেয়ারম্যানের বিষয়।

এ ব্যাপরে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান দিলাওয়ার হোসেন বলেন, সার্ভেয়ার প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন জেলা পরিষদের জমি জায়গা কথায় কি অবস্থায় আছে তা দেখবেন মাপযোগ করবেন এটা তার কাজ তার নিয়োগ সার্ভেয়ার হিসেবে। তবে প্রকৌশলী যদি মনে করেন তাহলে সহকারি হিসেবে নিতে পারেন। কিশোরগঞ্জ ও বরিশালে কি ভাবে উপসহকারীর দায়িত্ব পালন করলেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওটা তাদের বিষয়। যেহেতু তার নিয়োগ সার্ভেয়ার হিসেবে এবং একজন সার্ভেয়ারের কাজ জমি মাপা।

এ ব্যাপেরে সার্ভেয়ার প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন বলেন, জমি মাপার সার্ভেয়ারের নিয়োগ দিয়ে থাকেন ভূমি মন্ত্রনালয়। আর আমার সার্ভেয়ার উপ প্রকৌশলীর নিয়োগ দিয়েছে স্থানীয় মন্ত্রনালয়। দুটি নিয়োগ এক নয় এবং কাজও এক নয়। প্রজ্ঞাপনে স্পষ্ট করে বলা আছে সার্বেয়ার প্রকৌশলীর কাজ কি ?