দীর্ঘদিন কাজ করেও সরকারি স্বীকৃতি মেলেনি বিআরটিএ’র সীল মেকানিকদের

সড়কে দূর্ঘটনা কমাতে ডিজেল চালিত যানবাহনে রেজিস্ট্রেশনের পূর্বে গতিনিয়ন্ত্রক ‘স্পিড গভর্নর সিল’ (এক ধরনের যন্ত্রাংশ) বসানো হয়। যানবাহনে এ যন্ত্র বসান বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) স্পিড গভর্নর সিল মেকানিকরা। কিন্তু ২০১৮ সালের সড়ক নিরাপত্তা আইনের একটি ধারার কারণে সিল মেকানিকদের কার্যক্রম নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, বিআরটিএ’র প্রতিটি জেলা কার্যালয়ে একজন স্পিড গভর্নর সিল মেকানিক আছেন। যারা ৩০ থেকে ৩২ বছর আগে এ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত। তবে তাদের চাকরি স্থায়ীকরণ করা হয়নি। ২০২৩ সালে তারা স্থায়ীকরণের দাবিতে আদালতে রিট করেন। যার নম্বর ২৩৮১। এর আগেও রিট করা হয়েছে এবং রায় সিল মেকানিকদের পক্ষেই গেছে। ২০১৮ সালের সড়ক নিরাপত্তা আইনে কিছু ধারার কারণে ২০২৩ সালে করা রিটের রায় এখনো হয়নি।
জানা গেছে, এখন যারা এ পদে বিভিন্ন সার্কেলে আছেন, তারা আগের মতো কাজ করতে পারছেন না। বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেক সময় মারা তাদেরকে নানাভাবে হেনস্থার শিকারও হতে হয়। এমনকি তাদের সুযোগ-সুবিধা না দিয়েই চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
বিআরটিএ মিরপুর-১ সার্কেলের স্পিড গভর্নর সিল মেকানিক দ্বীন ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাকরির বৈধতার জন্য হাইকোর্টে রিট করি। কোর্ট এখনো রায় দেয়নি। আশা করছি, খুব দ্রূত আমরা রায় পাব।’ তিনি বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে আমরা কথা বলতে পারিনি। তাই এখন কথা বলছি। নতুন সরকার আমাদের দাবিগুলো মেনে নেবে আশা করছি।’ ভুক্তভোগিরা বলেন, আধুনিক যন্ত্র তৈরির মাধ্যমে সিল মেকানিকদের প্রশিক্ষিত করেও কাজে লাগানো যায়।
ঝিনাইদহ বিআরটিএ সার্কেলের সীল মেকানিক মো. বাবুল বলেন, ‘ব্রিটিশ আমলেই আমাদের এ পদ তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমরা আগের মতো মর্যাদা পাচ্ছি না। আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি। নোটিস ছাড়াই আমাদের চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। অথচ বিআরটিএ’র শুরু থেকেই এ পদ রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘শুরুতে যখন বিআরটিএতে জনবল কম ছিলো, তখন সিল মেকানিকরা অফিসের প্রায় সকল কাজ নিষ্ঠার সাথে করতেন। যে কারণে তারা দাফতরিক সব কাজে পারদর্শি।’
চুয়াডাঙ্গা বিআরটিএ সার্কেলের সিল মেকানিক মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘বিআরটিএ’র প্রতিটি জেলা কার্যালয়ে ৩০ থেকে ৩২ বছর ধরে একজন করে স্পিড গভর্নর সিল মেকানিক নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন।’
তিনি বলেন, ‘অনেকের ছেলেমেয়ে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত আছে। বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না করে ২০১৮ পরিবহন আইনে উক্ত পদ না রাখা সমীচিন হয়নি। এ বিষয়ে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, যোগাযোগ উপদেষ্টা ও বিআরটিএ চেয়ারম্যানের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন ভুক্তভোগী সীল মেকানিকরা।

এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন