দেশ থেকে দুর্নীতি দমন সম্ভব নয় : সাবেক দুদক চেয়ারম্যান
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বলেছেন, ‘বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতি দূর করা সম্ভব নয়, তবে দুর্নীতি কমানো যেতে পারে।’
শনিবার সকালে রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম হোসেন একথা বলেন। তিনি জানান, শুধু দুর্নীতির কারণে বছরে জাতীয় প্রবৃদ্ধি ১ থেকে দেড় শতাংশ কমে যায়।
গোলাম হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধে সভা, সেমিনার, সপ্তাহ পালন, গণশুনানি ও প্রতিবেদন প্রকাশ করাসহ নানাবিধ কর্মসূচি পালন করা সত্ত্বেও দুর্নীতি থেমে নেই, দেশে দুর্নীতি বাড়ছে। রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহারে দুর্নীতি দমনের প্রতিশ্রুতি দিলেও ক্ষমতায় এসে তা বাস্তবায়ন করে না। যে প্রক্রিয়ায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, যে প্রক্রিয়ার সরকার গঠিত হয়, সে প্রক্রিয়ার মধ্যেই যদি দুর্নীতির বীজ থাকে, তাহলে দুর্নীতি দমন সহজ হবে না। এ অবস্থার অবসানে পদ্ধতিগত সংস্কার জরুরি।’
দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিতার্কিকদের দেখা যাচ্ছে। ছবি : সংগৃহীত
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘শক্তিশালী সংসদীয় ব্যবস্থা, সুশাসন, সঠিক গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, আইনের শাসন ব্যতীত দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে অবৈধভাবে উপার্জিত জনগণের অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে, দেশের ব্যাংকগুলো অর্থশূন্য হয়ে পড়ছে, ঋণখেলাপির তালিকা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। রাঘববোয়ালদের ধরাছোঁয়ার বাইরে রেখে লোক দেখানো চুনোপুঁটিদের গ্রেপ্তার করে বড় বড় দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। দুর্নীতি এখন এতটাই প্রকট আকার ধারণ করেছে যে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ কাবিখা, কাবিটাসহ বিভিন্ন ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রেও চরম অনিয়ম পরিলক্ষিত হচ্ছে।’
কিরণ আরো বলেন, ‘দুর্নীতি প্রতিরোধ করাটাই এখন সরকারের অন্যতম এজেন্ডা হওয়া উচিত। রাজনীতিবিদরা চাইলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা শুধু সময়ের ব্যাপার। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে নির্বাচনী ইশতেহারে রাজনৈতিক দলগুলো দুর্নীতি দমনের কথা বললেও ক্ষমতায় গিয়ে তা বেমালুম ভুলে যায়। তবে রাষ্ট্র, সরকার বা রাজনৈতিক দলগুলোর একার পক্ষে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা মোটেও সম্ভব নয়। তাই দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা।’
এই প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ড. এস এম মোর্শেদ, ড. তাজুল ইসালম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক মাইনুল আলম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সালমা আহমেদ। ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিকে পরাজিত করে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের হাতে ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেওয়া হয়।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন