দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে জিতলেন যারা
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে সোমবার ১১৬টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হয়। বিকেল ৪টায় ভোট গ্রহণ শেষে গণনা শুরু হয়। এর পর একে একে বিভিন্ন উপজেলার ফল ঘোষণা করা হয়।
এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের ৫৯ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। অন্যদিকে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন ২৭ জন। বর্তমান সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীকে দুটি উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন। অন্যদিকে নির্বাচন বর্জন করা বিএনপির এক বহিষ্কৃত নেতা উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন।
ভোট গণনা শেষে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা এই ফলাফল ঘোষণা করেন।
আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান হলেন যারা
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় অরুনাংশু দত্ত টিটো, পীরগঞ্জে আখতারুল ইসলাম ও হরিপুরে অধ্যক্ষ জিয়াউল হাসান মুকুল;
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় ফজলে রাব্বী সুইট, তারাগঞ্জে আনিছুর রহমান লিটন ও পীরগঞ্জে নুর মোহাম্মদ মন্ডল নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে কাউনিয়া ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় যথাক্রমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আনোয়ারুল ইসলাম মায়া ও রুহুল আমিন।
গাইবান্ধার ফুলছড়িতে জিএম পারভেজ সেলিম, পলাশবাড়ীতে মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ ও সাদুল্যাপুরে শাহরিয়ার খান বিপ্লব;
দিনাজপুরের বিরলে একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, বীরগঞ্জে আমিনুল ইসলাম, নবাবগঞ্জে আতাউর রহমান ও ফুলবাড়ীতে আতাউর রহমান মিল্টন নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে এই জেলার পার্বতীপুরে আওয়ামী লীগের হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক, হাকিমপুরে হারুনুর রশীদ ও ঘোড়াঘাট রাফে খন্দকার শাহেন শাহ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বগুড়া সদরে আবু সুফিয়ান শফিক, গাবতলীতে রফি নেওয়াজ খান রবিন, সারিয়াকান্দিতে মুনজিল সরকার, সোনাতলায় অ্যাডভোকেট মিনহাদুজ্জামান লিটন, ধুনটে আব্দুল হাই খোকন, শাহজাহানপুরে প্রভাষক সোহরাব হোসেন ছান্নু, নন্দীগ্রামে রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, শেরপুরে মজিবর রহমান মজনু (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) ও আদমদিঘীতে সিরাজুল ইসলাম খান রাজু (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) জয়ী হয়েছেন।
নওগাঁর আত্রাইয়ে মো. এবাদুর রহমান প্রামাণিক, নিয়ামতপুরে মো. ফরিদ আহম্মেদ, ধামইরহাটে মো. আজাহার আলী, মহাদেবপুরে মো. আহসান হাবিব ভোদন, মান্দায় স. ম. জসিম উদ্দীন ও পত্নীতলায় মো. আব্দুল গাফফার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
পাবনা সদরে আলহাজ মোশারফ হোসেন (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), ঈশ্বরদীতে নুরুজ্জামান বিশ্বাস, ভাঙ্গুড়ায় মো. বাকিবিল্লাহ, বেড়ায় মো. আব্দুল কাদের, সাঁথিয়ায় আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দোলোয়ার ও সুজানগরে শাহিনুজ্জামান শাহিন (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) নির্বাচিত হয়েছেন।
সিলেট সদরে আশফাক আহমদ, দক্ষিণ সুরমায় আবু জাহিদ, বিশ্বনাথে মো. নুনু মিয়া, বালাগঞ্জে মোস্তাকুর রহমান, গোলাপগঞ্জে ইকবাল আহমদ চৌধুরী, কানাইঘাটে আব্দুল মোমিন চৌধুরী ও জকিগঞ্জে লোকমান উদ্দিন চৌধুরী জয়ী হয়েছেন।
মৌলভীবাজার সদরে কামাল হোসেন (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়), কমলগঞ্জে অধ্যাপক রফিকুর রহমান ও শ্রীমঙ্গলে রনধীর কুমার দেব নির্বাচিত হয়েছেন।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে এসএম আল মামুন, সন্দ্বীপে মো. শাহজাহান বিএ, রাঙ্গুনিয়ায় খলিলুর রহমান চৌধুরী, হাটহাজারীতে এসএম রাশেদুল আলম, রাউজানে একেএম এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল ও মীরসরাইয়ে মো. জসিম উদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বান্দরবান সদর উপজেলায় এ কে এম জাহাঙ্গীর, নাইক্ষ্যংছড়িতে মো. শফিউল্লাহ, রোয়াংছড়িতে চহাইমং মারমা, থানচিতে থোয়াই হ্লা মং, রুমায় উহ্লাচিং মারমা ও লামায় মোস্তাফা জামাল (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়) চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন।
খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে চেয়ারম্যান পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. জয়নাল আবেদীন।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীরা
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় আলী আসলাম জুয়েল, গাইবান্ধা সদরে শাহ সারোয়ার কবীর ও সাঘাটায় জাহাঙ্গীর কবীর; দিনাজপুরের খানসামায় আবু হাতেম, কাহারোলে আবদুল মালেক সরকার ও চিরিরবন্দরে তরিকুল ইসলাম তারিক; বগুড়ার শিবগঞ্জে ফিরোজ আহম্মেদ রিজু, কাহালুতে হাসিবুল হাসান কবিরাজ সুরজ ও দুপঁচাচিয়ায় আলহাজ ফজলুল হক; নওগাঁর সাঁপাহারে মো. শাহজাহান হোসেন, পোরশায় মো. মঞ্জুর মোরশেদ, বদলগাছীতে মো. সামসুল আলম খান ও রাণীনগরে মো. আনোয়ার হোসেন হেলাল;
পাবনার আটঘরিয়ায় মো. তানভীর ইসলাম, চাটমোহরে আব্দুল হামিদ মাস্টার ও ফরিদপুর উপজেলায় গোলাম হোসেন গোলাপ; সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে মো. নুরুল ইসলাম, বিয়ানীবাজারে আবুল কাশেম পল্লব, কোম্পানীগঞ্জে শামীম আহমদ শামীম, জৈন্তাপুরে কামাল আহমদ ও গোয়াইনঘাটে মোহাম্মদ ফারুক আহমদ; মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সুয়েব আহমদ, জুড়ীতে এম এ মুহিদ ফারুক, কুলাউড়ায় অধ্যক্ষ এ কে এম শফি আহমদ সলমান ও রাজনগরে শাহাজান খান; চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে তৈয়ব আলী ও কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় ফজলুল করিম সাঈদী চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
জাতীয় পার্টির তিনজন জয়ী
দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট জুলফিকার হোসেন ও রংপুরের পীরগাছা উপজেলায় আবু নাসের শাহ মো. মাহবুবার রহমান লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা জয়ী
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আবুল কালাম হয়ে বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন।
এ ছাড়া দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী খায়রুল আলম চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছেন।
সোমবার দেশের পাঁচ বিভাগের ১৬ জেলার ১১৬টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলে। অনিয়মের অভিযোগে বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকজন প্রার্থী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
৪৮ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত
৪৮ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান ২৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ১৩ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১২ জন। এর আগে যে ছয়টি উপজেলার সব পদেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে, সেগুলো হলো চট্টগ্রামের রাউজান, মিরসরাই, নোয়াখালীর হাতিয়া, ফরিদপুর সদর, পাবনা সদর ও নওগাঁ সদর।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন