ধরো-মারো হুমকি দিয়ে প্রধান বিচারপতিকে সরাতে চাইছে সরকার
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেছেন, সরকার ধরো-মারো হুমকি দিয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহাকে সরাতে চাইছে।
বুধবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ-ভাসানী) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ব্ক্তব্যে রিজভী এ অভিযোগ করেন।
ন্যাপের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী শফিকুল গনি স্বপনের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘চলমান অস্থিরতা : কোন পথে বাংলাদেশ’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
আলোচনায় রিজভী বলেন, সরকার মানুষের জীবন নিয়ে পুতুল খেলা শুরু করেছে। নির্বিঘ্নে চলাফেরার কোনো উপায় নেই। সরকার এগুলো করছে, কারণ ষোড়শ সংশোধনীর রায় তারা মানে না। তারা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। বিরোধী দলকে ভয় পাচ্ছে। তারা চিরস্থায়ী ক্ষমতায় থাকতে চায়।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ধরো-মারো হুমকি দিয়ে প্রধান বিচারপতিকে অপসারণ করতে চাইছে। সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আছে। এই অবৈধ ক্ষমতার মায়া তারা ত্যাগ করতে পারছে না। এ জন্যই ভয় পাওয়া, আর হুমকি-ধমকি দেওয়া।
সরকারের উদ্দেশে রিজভী বলেন, ‘সরকার বলছে আজকে পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করবেন না। পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট একটা উদাহরণ দেওয়াতে অসন্তুষ্ট হয়ে গেলেন। পৃথিবীর কোনো দেশ যদি ভালো দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করে, সেটা তো সকলেরই অনুকরণীয় হওয়া উচিত। কিন্তু ভালো দৃষ্টান্ত সরকার নেবে না। কারণ তারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে না।’
সরকার প্রধান বিচারপতিকে ‘মানসিক অসুস্থ’ বলে সরানোর উদ্যোগ নিচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, ‘মনে হচ্ছে সরকার পাগল হয়ে গেছে। এ জন্য তারা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ চাইছে। আওয়ামী লীগ তো বন্দুক দিয়ে সরকার চালাচ্ছে।’
‘আজকে অবাক হচ্ছি, ফজলে নূর তাপসের মতো লোক অ্যাটর্নি জেনারেলের পদ চাইছে। বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল তাঁদের সন্তুষ্ট করতে পারছে না। এই ফজলে নূর তাপসরা প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ চাইবেন, সেদিন বোধ হয় আর বেশি দূরে নয়। হয়তো সেদিন তারা পদত্যাগ করবেন অথবা দেশ ছেড়ে চলে যাবেন।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকের প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘খায়রুল হক কত নিচুমানের হতে পারে অর্থের লোভের জন্য। এই খায়রুল হকই গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। আমরা আইন প্রক্রিয়ায় জনগণের মাধ্যমে তাঁকে শাস্তি দিতে চাই। মইনউদ্দিন, ফখরুদ্দীন আর আজকের এই সরকার একই নৌকার মাঝি। এই সংসদকে কার্যকর করতে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
যারা গুম-খুন-গণহত্যা, ধর্ষণ ও ব্যাংক লুট, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি করে, তারাই এই সরকারের কাছে সম্মান পায় বলে মন্তব্য করেন রিজভী। বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাককে সরকার যথাযথ সম্মান দেয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন