ধর্মান্তরের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ করে উত্তরপ্রদেশে অধ্যাদেশ

ধর্মান্তরের জন্য বিয়ে নিষিদ্ধ করে ভারতের উত্তরপ্রদেশে নতুন একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে যোগী আদিত্যনাথের শাসনাধীন রাজ্য সরকার। ধর্মান্তর করার জন্য বিয়ে করলে রাজ্যটিতে এখন জেল-জরিমানা করা হবে। অধ্যাদেশ অমান্য করলে দশ বছর পর্যন্ত জেল ও ৫০ হাজার রুপি পর্যন্ত জরিমানার বিধান রাখা রয়েছে। কথিত ‘লাভ জিহাদ’ বন্ধ করতেই এ অধ্যাদেশ জারি করেছে ক্ষমতাসীন রাজ্য সরকার।

অধ্যাদেশে অনুযায়ী, ধর্ম পরিবর্তন করার জন্য বিয়ে করা হলে, সেই বিয়ে বাতিল বলে গণ্য হবে। আর জোর করে ধর্ম পরিবর্তন করার জন্য এক থেকে পাঁচ বছরের জেল হবে; সঙ্গে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা। দলিত ও আদিবাসীদের ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের মেয়াদ হবে তিন থেকে দশ বছর। জরিমানা ২৫ হাজার।

প্রলোভন দেখিয়ে গণহারে ধর্মান্তর করলে দশ বছর পর্যন্ত জেলের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।
অপ্রাপ্তবয়স্ক কাউকে বিয়ের জন্য ধর্মান্তর করলেও একই সাজা হবে। আন্তধর্মীয় বিয়ের বিরুদ্ধবাদীরা এ বিয়েকে বলছে ভালোবাসার নামে একধরনের জিহাদি কার্যক্রম। ধর্মীয় আবরণ দিয়ে একে বলা হচ্ছে ‘লাভ জিহাদ’।

সম্প্রতি কানপুর পুলিশ বলেছিল, গত দুই বছরে ১৪টি ভিন্নধর্মের ছেলে-মেয়ের বিয়ে হয়েছিল। তারা প্রতিটি ঘটনা তদন্ত করে দেখেছে। এগারোটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে কোথাও নাম বদল করে, কোথাও নাবালিকাকে বিয়ে করা হয়েছে। সেই সব ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

উত্তরপ্রদেশে মন্ত্রী সিদ্ধার্থ নাথ সিং বলছেন, কেউ যদি বিয়ে করার জন্য ধর্ম বদল করতে চান, তা হলে তাকে জেলা প্রশাসকের কাছে দুই মাস আগে আবেদন জানাতে হবে।

তিনি অনুমতি দিলে ধর্ম পরিবর্তন করা যাবে।
তবে এই অনুমতি পাওয়া নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে বিরোধী নেতাদের। কারণ, আইনশৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে অনুমতি না দেয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন তারা।

সিদ্ধার্থ নাথও জানিয়ে রেখেছেন, সাধারণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ও মেয়েদের, বিশেষ করে দলিত ও আদিবাসীদের ন্যায়ের জন্য এই অধ্যাদেশ জরুরি ছিল।

এ ব্যাপারে ভারতের প্রবীণ সাংবাদিক জয়ন্ত ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, হিন্দুত্বের বার্তা দেওয়ার জন্য এই অর্ডিন্যান্স করা হয়েছে। এটি অনেকটা নাগরিকত্ব আইনের মতো। নাগরিকত্ব নিয়ে আইন থাকা সত্ত্বেও নতুন আইন করা হয়েছিল। সেটাও বার্তা দেয়ার জন্যই। এখানেও সেই একই উদ্দেশ্যে অর্ডিন্যান্স করা হয়েছে।