ধর্ষক গুরুর ডেরা থেকে কনডম-গর্ভনিরোধক উদ্ধার
দুজন শিষ্যকে ধর্ষণের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ভারতের বিতর্কিত ধর্মগুরু গুরপ্রীত রাম রহিম সিংয়ের লেক্সাস, রেঞ্জ রোভারের মতো বিলাসবহুল গাড়ির সংখ্যা যে একাধিক, সেটা নতুন কোনো খবর নয়। আবার তার বিশাল বিশাল ঘরের অধিকাংশ জায়গা যে খাঁটি সোনা দিয়ে মোড়ানো সেটাও নতুন খবর নয়।
কিন্তু সেই বিতর্কিত ধর্ষক গুরমিতের গোপন আস্তানা থেকে এবার মিলেছে প্রচুর পরিমাণে কনডম, গর্ভনিরোধক ট্যাবলেট, পর্নোগ্রাফি সম্বলিত সিডি-ডিভিডি এবং উত্তেজক ট্যাবলেটও পাওয়া গেছে।
দুজন শিষ্যকে ধর্ষণের মামলার প্রধান তদন্তকারী সিবিআই-এর অবসরপ্রাপ্ত ডিআইজি এম নারায়ণন এসব তথ্য জানিয়েছেন। ডেরার ভিতরে অসামাজিক কাজকর্ম কীভাবে দিনের পর দিন রাম রহিম চালাতেন, সে ব্যাপারেও সংবাদ মাধ্যমকে জানান নারায়ণন।
ডেরার পরিবেশ একেবারে নিজের চাহিদামাফিক সাজিয়েছিলেন রাম রহিম। কেমন ছিল সেই পরিবেশ? বিভিন্ন সূত্র থেকে সেই খবর জোগাড় করেছিলেন নারায়ণন।
তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, সুন্দরী কমবয়সী সাধ্বীদের দ্বারা নিজের গোপন গুহায় পরিবেষ্টিত থাকতেন রাম রহিম। তার ব্যক্তিগত পরিচর্যার দায়িত্বে থাকতেন এই নারীরা। কিন্তু অনেক সময় তাতেও মন ভরতো না বাবার। ঠিক রাত ১০টার সময় ফোন যেত প্রধান সাধ্বীর কাছে।
তিনি আরও বলেন, নতুন তরুণী সাধ্বী পাঠানোর নির্দেশ দিতেন তিনি। ডেরার সকলেই এ ব্যাপারে জানে। কিন্তু ভয়ে মুখ খুলতেন না কেউ।
সামাজিক কাজকর্মের আড়ালে রাম রহিম স্বেচ্ছাচার চালাতেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। রাম রহিমকে মানসিক রোগগ্রস্ত বলেও দাবি করেন নারায়ণন। তাকে জন্তু ছাড়া আর কিচ্ছু ভাবেন না তিনি।
২০ বছরের কারাদণ্ড এবং ৩০ লাখ রুপি জরিমানা হয়েছে ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত গুরমিতের। রায়ের পর পর তল্লাশি চালানো হয় তার ডেরায়। সেখান থেকে ১৮ জন নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের উপরেও যৌন নির্যাতন চালানো হয়েছে কি না, তা জানার জন্য ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে বলে জানা গেছে।
নারায়ণন জানান, শুধুমাত্র যৌন নির্যাতনের কারণেই ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০২ সালের মধ্যে ডেরা ছেড়ে গেছেন দুই শতাধিক নারী। কিন্তু তাদের মধ্যে মাত্র ১০ জনকে খুঁজে পেয়েছে সিবিআই। আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন মাত্র দু’জন। বাকিরা মুখ খুলতে চাননি।
তবে দুজনকে খুন করার মামলাও ঝুলছে রাম রহিমের মাথার উপর। ২০০২ সালে ধর্ষণের কথা জানিয়ে দুই শিষ্য চিঠি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটোলবিহারী বাজপেয়ীকে।
ডেরা ম্যানেজার রঞ্জিত সিংহের বোন ছিলেন তাদের একজন। সাংবাদিক রামচন্দ্র ছত্রপতি সেই চিঠি ‘দেশ সেবক’ নামের একটি পত্রিকায় প্রকাশ করেন। তার জেরে রঞ্জিত সিংহ এবং ছত্রপতিকে খুন করান রাম রহিম সিং বলে অভিযোগ রয়েছে। সেই মামলার শুনানি আগামী মাসেই শুরু হবে।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন