ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে যা বললেন জামায়াত সেক্রেটারি

আগামী ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এবারের নির্বাচনটি ব্যাপক আলোচিত। কারণ দশম সংসদ নির্বাচনে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিবিহীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল- যা বিতর্কের জন্ম দেয়।

কিন্তু এবার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে বিএনপি। তবে এবার পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি হয়েছে। গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছে। যাতে বিএনপি যুক্ত রয়েছে।

এদিকে বিএনপির অন্যতম শরিক দল একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া জামায়াতে ইসলামী তাদের দলীয় নিবন্ধন হারিয়েছে।

ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে কিংবা দলীয় প্রতীকে আর নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না জামায়াত। তাই এখন তাদের সামনে দুটি পথ। হয় বিএনপির সঙ্গে ধানের শীষে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে, না হয় স্বতন্ত্রভাবে।

এদিকে জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করা না-করা নিয়ে বিএনপি বেশ অস্বস্তিতে পড়েছে। কারণ বিএনপি নতুন জোট ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে যুক্ত আছে। সেক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে অনেক কিছু চিন্তা করতে হচ্ছে বিএনপিকে।

এদিকে জামায়াতকে নিয়ে নতুন জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কয়েকজন নেতা অনানুষ্ঠানিকভাবে তাদের অস্বস্তির কথা জানালেও তারা এ নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না।

তবে বিএনপি বলছে, যুদ্ধাপরাধী ছাড়া জামায়াতের অন্য নেতাদের ধানের শীষ প্রতীক দেয়ায় তারা কোনো সমস্যা দেখছে না।

বিএনপির দলীয় প্রতীক ধানের শীষের প্রত্যয়নপত্র নিয়ে ২৫টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জামায়াত নেতারা। দলটির আরও ডজন খানেক প্রার্থী স্বতন্ত্র হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল শফিকুর রহমান বলেন, ধানের শীষ প্রতীকে তাদের নির্বাচন করার বিষয়ে তারা বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘যেহেতু আপাতত যে কোনোভাবেই হোক, আমাদের নিবন্ধন বাতিল করে রাখা হয়েছে, সে কারণে আমরা দলের নামে এবং নির্দিষ্ট প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করতে পারছি না। তাই আপনি লক্ষ্য করবেন, জোটের সব দলই ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছে। প্রতীক বড় নয়, বরং আমাদের ঐক্যটা বড়। এটাকে সম্মান করেই আমরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়েছি।’

এবার নির্বাচনে ধানের শীষের ওপর ভর করা ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর কোনো উপায় নেই বলে বিশ্লেষকদেরও অনেকে মনে করছেন।

তারা বলছেন,বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিচার এবং ফাঁসি কার্যকর হওয়া ও আওয়ামী লীগ সরকারের চাপ- এসবের প্রেক্ষাপটে দলটি একটি প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

ফলে জামায়াতে ইসলামী তাদের অস্তিত্বের স্বার্থে পদক্ষেপ নিয়েছে বলেই বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কিন্তু প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে বিএনপিকে।

যদিও ইতিমধ্যেই বিএনপি ব্যাখ্যা দিয়েছে, তারা কোনো চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীকে ধানের শীষে মনোনয়ন দেয়নি।

এছাড়া নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় জামায়াতে ইসলামী নামের কোনো দল এখন নেই, এমন যুক্তিও দিচ্ছেন বিএনপি নেতারা।