নরসিংদীতে তরুণীকে হেনস্তাকারী নারী গ্রেপ্তার
নরসিংদী রেলস্টেশনে আধুনিক পোশাকের অজুহাতে এক তরুণীকে হেনস্তার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত নারীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)।
সোমবার (৩০ মে) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১১ নরসিংদীর ক্যাম্প কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌহিদুল মবিন খান।
এরআগে রোববার (২৯ মে) রাত ৩ টার দিকে শিবপুর উপজেলার ইটাখলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ওই নারী নরসিংদী সদরের উপজেলা মোড় এলাকার মার্জিয়া আক্তার। তিনি পেশায় একজন ঘটক।
র্যাব-১১ নরসিংদীর ক্যাম্প কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌহিদুল মবিন খান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ইটাখলা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে মার্জিয়া আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি একেক জায়গায় একেক নাম-পরিচয় ব্যবহার করতেন। ফলে শিলা, শায়লা নামে পরিচিত তিনি।
তবে জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তার নাম মার্জিয়া আক্তার। বর্তমানে তিনি আমাদের হেফাজতে আছেন। পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এরআগে গত বুধবার সকালে নরসিংদী রেল স্টেশনের ১ নম্বর প্লাাটফর্মে ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন দুই তরুণ ও এক তরুণী। মেয়েটির পড়নে ছিল জিন্স প্যান্ট ও টপস। তা দেখে স্টেশনে অবস্থানরত এক নারী প্রথমে ওই তরুণীকে আঘাত করে ও পরে আরও কয়েকজন ব্যক্তি তার ওপর হামলার চেষ্টা চালায়। ভুক্তভোগী ওই তরুণী দৌড়ে স্টেশন মাস্টারের কক্ষে আশ্রয় নিয়ে তাকে বাঁচানোর অনুরোধ করে। পরে স্টেশন মাস্টারের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তাদেরকে ঢাকাগামী চট্টগ্রাম মেইল ট্রেনে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
তরুণীকে হেনস্তা ও মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে টনক নড়ে সংশ্লিষ্টদের। এতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলে ঘটনার দুই দিন পর শুক্রবার রাতে নরসিংদী শহরের ইউএমসি জুট মিলের সামনে থেকে ইসমাইল মিয়া নামে এক যুবককে আটক করে নরসিংদী সদর মডেল থানা পুলিশ। পরে রাতেই তাকে রেলওয়ে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়। তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শনিবার বিকেলে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আদালতে তোলা হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠান এবং এই ঘটনার তদন্ত করে মামলা করার নির্দেশ দেন।
পরে ওই রাতেই নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহেদী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ও ৩০ ধারায় ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে এক নারীসহ দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এবং অজ্ঞাত আরও এক নারী ও ১০ পুরুষকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মুঠোফোনে ধারণ করা ভিডিওতে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের আসামি করা হয়।
সোমবার দুপুরে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আদালত ইসমাইলের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন