‘নারীরা ভোট জালিয়াতি করেন না’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বলেছেন, গত ৩১ বছর ধরে দেশের পুরুষের হাতে ক্ষমতা নেই। দেশের প্রধানমন্ত্রী, নয়তো বিরোধীদলীয় নেত্রীর ভূমিকায় আছেন নারীরাই। ১৯৮৬ সাল থেকে এ অবস্থার শুরু। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এ ধরনের নজির নেই।
সিইসি বলেন, দেশের নারীরা ভোট জালিয়াতি করেন না। ভোটকেন্দ্রে মারামারি করেন না। নারীরা যেমন ঘর গোছাতে পারেন, তেমনি রাষ্ট্রও গোছাতে পারেন। রাজনীতিতে আসা নারীদের যোগ্যতা নিয়েও কোনো সন্দেহ নেই বলে উল্লেখ করেন সিইসি।
মঙ্গলবার ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল আয়োজিত ‘অ্যাডভান্সড উইমেন্স লিডারশিপ ইন ইলেকশনস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে সিইসি এসব কথা বলেন।
রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এ গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সিয়া স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্থানীয় এবং সরকারের উচ্চপর্যায়ে বিভিন্ন পদে নারীরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিন্তু এখনো অনেক কিছু করার আছে। এখন পর্যন্ত রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে আছেন নারীরা।
সিইসি তাঁর বক্তব্য দেওয়ার সময় রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন,‘আমরা নেতৃত্ব দানে পিছিয়ে আছি তা স্বীকার করি না। আপনাদের দেশে কিন্তু নারীর তেমন অগ্রগতি নেই। রাষ্ট্র পরিচালনায় কোনো নারী নেতা পাওয়া যায়নি। চীনে অদূর ভবিষ্যতে ক্ষমতায় কোনো নারী আসবে বলে মনে হয় না। রাশিয়া, তুরস্কে কোনো নারী রাষ্ট্র প্রধান হতে পারেননি। জাপানের রাজনীতিতে নারী কই?’
তবে গোলটেবিল বৈঠকে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নারী নেত্রীরা বলেন, যোগ্যতা থাকার পরও দলের পুরুষ সদস্যরা নারীদের মূল্যায়ন করেন না। নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন পাওয়া যায় না। দলগুলো থেকে কত শতাংশ নারীকে নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে হবে সে সংক্রান্ত একটি আইন বা বাধ্যবাধকতা আরোপ করার জন্য নির্বাচন কমিশন যাতে উদ্যোগ নেয় সে আহ্বান জানান রাজনৈতিক দলের নেত্রীরা।
এ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘কতজন নারীকে মনোনয়ন দেবে তা আমরা কোনো দলকে বলতে পারি না। এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। তবে দলগুলোকে উৎসাহী করতে পারি। আর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ২০০৯ (সংশোধিত) অনুযায়ী, ২০২০ সালের মধ্যে রাজনৈতিক দলের সকল পর্যায়ের কমিটিতে বাধ্যতামূলকভাবে ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্ত করার আইনগত ভিত্তি তো আছেই।’
এ গোলটেবিল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের চিফ অব পার্টি কাটিয়ে ক্রোয়াকে। প্যানেল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন