নিউমার্কেটের হামলায় তৃতীয় পক্ষ ছিল, দাবি মালিক সমিতির
নিউমার্কেট দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন জানিয়েছেন, রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকার দোকানগুলো দ্রুত খুলে দেওয়া হবে। বুধবার (২০ এপ্রিল) নিউ-মার্কেট সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাধান চাই। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও প্রশাসনকে নিয়ে আমরা কমিটি গঠন করব। যাতে ভবিষ্যতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র না করে এই রকম সংঘর্ষের ঘটনা না ঘটে। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করব, যারা দোষী তাদের চিহ্নিত করব।
তিনি আরও বলেন, দুই পক্ষের আলোচনার মধ্যে দোকান খোলা হবে। খুব শিগগিরই দোকান খুলে দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন বিষয়টি মীমাংসা করবেন।
ডা. শাহীন বলেন, ঢাকা কলেজের কোনো প্রতিনিধি আমাদের কাছে আসেনি। যারা এসেছিল তারা ঢাকা কলেজের কি না এটাও জানি না। আমরা বা আমাদের প্রতিনিধি যেতে পারিনি। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের সামাজিক দায়িত্ব আমাদের। আমরা শান্তি চাই, সবস্থান চাই, দোকান খুলতে চাই।
এ সময় কী ধরনের দায়িত্ব পালন করবেন তা জানতে চাইলে এড়িয়ে যান ডা. শাহীন।
এদিকে মঙ্গলবার নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালে অ্যাম্বুলেন্সে হামলার যে ঘটনা ঘটেছিল তাতে নিউমার্কেটের কেউ জড়িত ছিল না। সেখানে তৃতীয় পক্ষ হামলা চালিয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখলেই বিষয়টা স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির হেলাল উদ্দিন।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা সম্মানজনক অবস্থানে থাকে। কিন্তু কিছু উচ্ছৃঙ্খল ঘটনা ঘটেছে। অ্যাম্বুলেন্সে হামলা ব্যবসায়ীরা করেনি। এখানে তৃতীয় পক্ষ ছিল। তাদের কাজ এগুলো ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে।
হেলাল উদ্দিন বলেন, তৃতীয় পক্ষের কাজ। তারাই হামলা করেছে। অ্যাম্বুলেন্সে হামলা করেছে, গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে। এসব ঘটনায় ব্যবসায়ী বা ঢাকা কলেজের ছাত্ররা ছিল না, তৃতীয় পক্ষের কাজ ছিল এসব ঘটনা।
হকার উচ্ছেদ বিষয়ে জানতে চাইলে হেলাল উদ্দিন বলেন, ভাই হকার উচ্ছেদের ক্ষমতা কি আমাদের আছে, এটা আমাদের ক্ষমতার বাইরে। এই বিষয়ে প্রশাসন ভালো বলতে পারবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাতে রাজধানীর নিউমার্কেটের একটি খাবারের দোকানের কর্মীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে গভীর রাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে। সংঘর্ষ রাত আড়াইটা পর্যন্ত গড়ায়।
এ ঘটনার জেরে মঙ্গলবার সকাল থেকে দিনভর দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বিকেলে পুলিশ এসে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে দুই পক্ষকে সরালেও পরিস্থিতি শান্ত হয়নি। ঢাকা কলেজের ছাত্রদের বিকেলের মধ্যে ছাত্রাবাস ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তারা তা করেননি। রাত পৌনে নয়টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন। অন্যদিকে নিউমার্কেটের কাছে ব্যবসায়ীরাও অবস্থান নিয়ে আছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষে নাহিদ (১৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জানা গেছে, সংঘর্ষের সময় আহত অবস্থায় নাহিদ রাস্তায় পড়েছিলেন। তিনি বাটা সিগনাল এলাকায় একটি কুরিয়ার সার্ভিসে কাজ করতেন।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন