নিকাব না খোলায় ভাইবা নেয়নি শিক্ষক, প্রতিবাদে ইবি ছাত্র আন্দোলনের মানববন্ধন
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় নিকাব না খোলায় এক ছাত্রীর ভাইভা না নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্র আন্দোলন।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুর সোয়া বারোটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিশ্ববিদ্যায়ের উপ-উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন সংগঠনটি।
মানববন্ধনে প্রধান অতিথি বক্তব্যে সংগঠনটির সদ্য সাবেক কেন্দ্রীয় শুরা সদস্য মু. নাঈম উদ্দিন বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানে এধরনের ইস্যু নিয়ে মানববন্ধন করতে হচ্ছে আমাদের, বিষয়টি লজ্জাজনক। নিকাব না খোলায় ভাইভা থেকে বের করে দেওয়ায় সংবিধানের ধর্মীয় স্বাধীনতার বিধানকে লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি। তিনি আরো বলেন, এ ধরণের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট আবেদন জানাচ্ছি।
এছাড়াও শাখা সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন রাহাতের সঞ্চালনায় শাখা সভাপতি আল আমিন বলেন, পর্দা মুসলিম নারীর রক্ষাকবচ ও আত্মপরিচয়ের হাতিয়ার। কিন্তু স্বাধীন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ এবং একটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীর অধিকারের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের এমন নগ্ন হস্তক্ষেপ ও কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে চরমভাবে আঘাত করেছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান ও নাগরিক অধিকার হরণ করার নামান্তর। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার আশ্বাস রাখেন তিনি।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আল-ইমরান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মু. সাজ্জাদ সাব্বির, দাওয়াহ সম্পাদক মো: আনওয়ার ইসলাম, তথ্য -গবেষণা ও প্রচার সম্পাদক মো: আবু সাঈদ, প্রকাশনা দফতর সম্পাদক নেয়ামাতুল্লাহ আল ফারিস, অর্থ ও কল্যাণ সম্পাদক ইয়াসিন আরাফাত, পাঠাগার ও পাঠচক্র সম্পাদক আবু হুরায়রা, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক মো: ইসমাইল হোসেন তাকবির ও কার্যনির্বাহী সদস্য মো: আমানুল্লাহ সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়
এর আগে, গত ১৩ ডিসেম্বর (বুধবার) বিভাগটির ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ১ম বর্ষের ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ওই শিক্ষার্থী নেকাব পরিহিত অবস্থান ভাইভা দিতে আসেন। ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ তার পরিচয় নিশ্চিতের জন্য নেকাব খুলতে বলেন। তবে ওই শিক্ষার্থী নেকাব খুলতে অস্বীকৃতি জানায়। এবং প্রয়োজনে নারী শিক্ষকের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করার দাবি জানান। তবে সে নেকাব না খোলায় উপস্থিত শিক্ষকরা তার ভাইভা পরীক্ষা নিতে অসম্মতি জানান। এরপর দীর্ঘ এক মাস ওই শিক্ষার্থীর ভাইভা না নেওয়ার অভিযোগ উঠে বিভাগের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। জানা যায়, উক্ত বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী আখতার হোসেন, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি শিমুল রায়, পরীক্ষা কমিটির সভাপতি উম্মে সালমা লুনা এবং বিভাগের শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ।
এই রকম সংবাদ আরো পেতে হলে এই লেখার উপরে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক ফ্যান পেইজে লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন। সংবাদটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে হলে এই পেইজের নীচে মন্তব্য করার জন্য ঘর পাবেন