নিমেষেই অদৃশ্য হয় যে প্রাণী

সমুদ্রে কিছু প্রাণী অদৃশ্য হতে পারে। বিষয়টি নানা প্রশ্ন জাগায়। আসলে কি এমন প্রাণী আছে? হ্যাঁ, কিছু প্রাণী রয়েছে যারা নিজের দেহকে এমনভাবে লুকিয়ে ফেলে, যা অদৃশ্য হওয়ার মতোই বলা যায়। প্রাণীগুলোর মধ্যে গ্লাস অক্টোপাস ও গ্লাস স্কুইড অন্যতম।

গ্লাস অক্টোপাস : সমুদ্রে দুটি উপায়ে নিজেদের লুকায় সামুদ্রিক প্রাণী গ্লাস অক্টোপাস। এটি সাগরের তলদেশে বসবাসকারী প্রাণী বালি বা পাথরের সঙ্গে মিশে যেতে পারে কিংবা লুকিয়ে পড়তে পারে প্রবালের আড়ালে।

এ সময় এটি প্রায়ই কালো হয়ে যায়, যা অদৃশ্য হওয়ার নামান্তর। সমুদ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি যখন এই প্রাণীগুলো চলে আসে তখন শিকারির কাছ থেকে লুকাতে চাইলে এক বিশেষ আলোর ঝলকানি সৃষ্টি করে। যা বায়োলিউমিনিসেন্স নামে পরিচিত। এই প্রক্রিয়ায় তারা শিকারিদের সামনে বিভ্রম সৃষ্টি করে। আর শিকারিরা ভাবে শিকারটি অদৃশ্য হয়ে গেছে।

গ্লাস স্কুইড : গ্লাস পরিবারের অন্তর্ভুক্ত প্রায় ৬০ প্রজাতির স্কুইড রয়েছে। সমুদ্রের ২০০ থেকে ১০০০ মিটারের মধ্যে বসবাস করে এরা। গ্লাস স্কুইডের শরীর পুরোপুরি স্বচ্ছ, তবে এদের বড় চোখগুলো অপ্রকাশিত।

এটি তাদের জন্য একটি সমস্যা। যেহেতু নিচের সাঁতার কাটা শিকারিরা সহজেই তাদের ছাড়া দেখতে পারে, এজন্য গ্লাস স্কুইড তাদের লুকানোর জন্য ছদ্মবেশের একটি চতুর রূপ ব্যবহার করে। চোখের নিচে একটি বিশেষ কৌশলে এরা আলো তৈরি করতে পারে। সেই আলো সূর্যালোক থেকে নিচে ফিল্টারিং হয়ে আসা আলোর অনুরূপ দেখায়। তাই এটি সম্পূর্ণরূপে নিচে সাঁতার কাটা শিকারিদের কাছে তখন অদৃশ্য করে তোলে।

পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখেছেন, স্কুইড বিশেষ প্রক্রিয়ায় যে আলো সৃষ্টি করে তা বিস্ময়করভাবে চার দিকের অন্য আলোর সঙ্গে মিশে যায়। তখন এমন একটি বিভ্রম তৈরি করে যা দেখে মনে হয় আলোটি চতুর্দিক থেকে আসছে। এতে প্রাণীটির একটি ছদ্মবেশ তৈরি হয়।